পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দেশের রাজনীতি এখন উত্তপ্ত। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথের বিরোধীদল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নানান কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে।

অপরদিকে, সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো ঘোষণা দিয়ে রাজপথে রয়েছে। তারা বলছে, আন্দোলনের নামে বিএনপি যাতে আগুন সন্ত্রাস, জ্বালা-পোড়াও করতে না পারে, জানমালের ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য তারা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন।

সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফার দাবি আদায়ে বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে ১৮ ও ১৯ জুলাই গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ি এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে পুরান ঢাকা পর্যন্ত পদযাত্রার ঘোষণা দেয় দলটি। ১৩ জুলাই বিএনপির পদযাত্রার বিপরীতে একই সময়ে সারাদেশে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার কর্মসূচি দেয় ক্ষমতাসীন দল। যদিও আগে থেকে আন্দোলনরত বিএনপি ও তার মিত্রদের কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশ ও সতর্ক অবস্থানের কর্মসূচি পালন করে আসছিল সরকার দলীয়রা। তবে এখন থেকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ শোভাযাত্রা হিসেবে পালিত হবে বলে ঘোষণা দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এদিন সকাল ১০টায় পদযাত্রা শুরু হবে। গাবতলী থেকে পদযাত্রা শুরু করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং মগবাজারে যুক্ত হবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। পদযাত্রাটি টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ গোলচত্বর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা (আগারগাঁও), বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, এফডিসি, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল (শাপলা চত্বর), ইত্তেফাক মোড় এবং দয়াগঞ্জ রায়সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে বিকেল ৪টায় ১৩ কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষ হবে।

আগামীকাল বুধবার (১৯ জুলাই) শুধু ঢাকা মহানগরে এই পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এদিন আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পদযাত্রা শুরু হবে। পরে বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, আবুল হোটেল, খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদাপাড়া, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীতে (চৌরাস্তা) বিকেল ৪টায় ২৪ কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষ হবে। রামপুরা ব্রিজে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রায় যুক্ত হবে। পদযাত্রায় প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার নেতাকর্মীকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সফল করতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদস গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে।

এদিকে আজ ঢাকা মহানগর ছাড়াও রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের আওতাধীন সব জেলা ও মহানগরে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এদিন ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে থেকে ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন ওবায়দুল কাদের। সমাবেশের পর শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড ও সিটি কলেজের সড়ক হয়ে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে।

বুধবার আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার কর্মসূচি পালিত হবে ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আওতাধীন সব জেলা ও মহানগরে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। শোভাযাত্রার আগে সাতরাস্তায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন ওবায়দুল কাদের।

সারাদেশে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচি সফল করতে দল এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বার্তা বাজার/জে আই