ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। তবে একতারা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় যারা জড়িত ভিডিও দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মনির হোসাইন খান।

সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর বনানী বিদ্যা নিকেতন কেন্দ্রে এসে তিনি এসব কথা জানান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা এই বিদ্যালয়ে আসার প্রায় আধা ঘণ্টা আগে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি।

এসময় সাংবাদিকরা মনির হোসাইন খানকে হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানতাম না। এখানে এসে শুনলাম। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে প্রটেকশন দিয়েছে। হিরো আলমের উপর হামলার ঘটনা ঘটে থাকলে ভিডিও দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, আশরাফুল আলম নামে একজন প্রার্থী ৬০-৭০ জন লোক নিয়ে কেন্দ্রে এসেছিল। এখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপত্তার জন্য বাধা দিয়ে প্রটেক্ট দিয়ে বের করেছে।

হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় কি তাহলে নির্বাচন কমিশনের হাতে নিয়ন্ত্রণ নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না নিয়ন্ত্রণ আছে। আর তাকে কেন্দ্রের ভেতর মারধর করা হয়েছে কিনা সেটা তো আমি দেখিনি। মারধরের এমন অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমি বিষয়টি দেখছি। আর আমাকে তো বিষয়টি আগে দেখতে হবে। দেখে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এখানে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো নিয়ে উনিও( হিরো আলম) কিন্তু কোনো অভিযোগ করেনি। তারা কোনো স্লোগান দিয়েছিল কিনা এবং ব্যাচ পরিহিত ছিল কিনা সবই দেখবো বলে তার বক্তব্যে যোগ করেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা।

এর আগে, রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে বিকেল সাড়ে তিনটার একতারা প্রতীকের প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তায় তাকে কেন্দ্র থেকে বাহির নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গেছে, বনানী বিদ্যা নিকেতন কেন্দ্রে বিকেল ৩ টা ১৮ মিনিটে প্রবেশ করেন হিরো আলম। এ সময় সঙ্গে ছিল তার সমর্থকরাও। নৌকা প্রার্থী আরাফাতের সমর্থকরা তখন ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকে। এরপর হিরো আলম কেন্দ্রের পশ্চিম পাশের ভবনের একটি কক্ষে ঢুকতে যান। তখন নৌকার সমর্থকরা তাকে গালাগালি শুরু করেন। তাদের মধ্য থেকে একজন হিরো আলমে ধাক্কা দেন। এতে হিরো আলম ক্ষেপে যান এবং সেই যুবকের দিকে তেড়ে যান। এই অবস্থা দেখে উপস্থিত আনসার ও পুলিশ সদস্যরা হুইসেল বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এক পুলিশ সদস্য হিরো আলমকে রক্ষা করে গেটের দিকে নিয়ে যায়।

গেট থেকে বের হওয়া মাত্র নৌকার সমর্থকরা তাকে ধাওয়া দেন এবং মারধর শুরু করেন। তাদের মারধরের মাটিতে পড়ে যান হিরো আলম। এ সময় প্রায় ৫০ জনের বেশি যুবক ৩০ সেকেন্ড ধরে তাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। হিরো আলমের সমর্থকরা তাকে দ্রুত তুলে নিয়ে দৌড় দিলে নৌকার সমর্থকরা তাদোর পেছন পেছন যায় এবং তাদের আবারও আরেক দফা হামলা করে। বারবার হামলার এক পর্যায়ে হিরো আলমের সমর্থকরা দ্রুত বনানীর দিকে চলে যান।

এ বিষয়ে সেখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে হামলা শেষে হামলাকারী যুবকরা একে অপরকে বলছিল, ‘আজ বসিয়ে দিলাম’। হামলার ভিডিও দেখেও হাসাহাসি করছিল হামলাকারীরা।

বার্তা বাজার/জে আই