তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করে বলেছেন, বিএনপির এক দফার আন্দোলন চট্টগ্রামেই মারা যায় কি না, তা দেখার বিষয়।

বুধবার (৫ জুলাই) সচিবালয়ে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সংবাদপত্রে প্রতিফলন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপি জানিয়েছে তারা চট্টগ্রাম থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু করবে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি চট্টগ্রাম থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু করবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কিন্তু চট্টগ্রামে নিহত হয়েছিলেন তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। চট্টগ্রাম থেকে শুরু করা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এক দফার আন্দোলন তো তারা মাঝে মধ্যে ঘোষণা দেন, এক দফার আন্দোলন চট্টগ্রামে মারা যায় কি না, সেটি দেখার বিষয়।

বিদেশিদের ‘পায়ে না ধরে’ জনগণের কাছে নালিশ করার অনুরোধ

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশিরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়, আমরা তাদের এটি জানিয়েছি।’ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশকে বলা কতটুকু যুক্তিসংগত? তথ্যমন্ত্রীকে এই প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।

এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির যদি কোনো নালিশ থাকে দেশের জনগণ হচ্ছে দেশের মালিক। দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় কারা যাবে সেটি নির্ধারণ করার মালিক হচ্ছে জনগণ। বিএনপির যদি কোনো নালিশ থাকে সেই নালিশ দিতে হবে জনগণের কাছে। সেই নালিশ বিদেশিদের কাছে নয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচন হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেখানে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বে থাকে। আমাদের দেশেও ঠিক একইভাবে নির্বাচন হবে। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, নালিশ জনগণের কাছে করার জন্য। বিদেশিদের হাতপায়ে না ধরার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের আরও কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসছেন- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তা আসছেন এবং আরও কয়েকজন কর্মকর্তা আসবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র বিরাট ভূমিকা রাখছে। তাদের এই আগমনে আমরা স্বাগত জানাই। তাদের এই আগমন সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তাই বহন করে।

বিদেশিরা ঘন ঘন আসছে। আওয়ামী লীগ চাপে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো চাপে নেই। ২০১৩-১৪ সালে যে আন্দোলন ও সহিংসতা তারা করেছে আমরা তা সামাল দিয়েছি। সেটি করার সামর্থ্য এখন বিএনপির নেই। ভূ-রাজনীতির কারণে সেই ধরনের আন্দোলন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, সেই ধরনের ঘটনাপ্রবাহ ঘটানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা জানি কখন কি করতে হবে। সুতরাং আমরা কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছি না।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে জনগণকেও বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছিল। তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদেরও আহ্বান জানিয়েছিল ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য। তাদের এত প্রচারণা-আহ্বানের মধ্যেও সেখানে গড়ে ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। গণতন্ত্রের মূল বিষয় হচ্ছে- জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কি না। বিএনপির অংশগ্রহণকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। বিএনপি যদি অংশগ্রহণ নাও করে আগামী নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।

বার্তা বাজার/জে আই