ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ ভোট বর্জণের ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার (৭ জানুয়ারী) সকালে কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে, নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারায় মদিনাতুল উলুম কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও নৌকা প্রার্থীর এজেন্টকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ উল্লেখ যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় সকাল ১০টার দিকে তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আবুল হোসেন দীপু বলেন, অধিকাংশ কেন্দ্র নৌকার লোকজনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। তারা জোরপূর্বক ভোট দিচ্ছে, এখানে প্রশাসন নীরব। দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে জানানো হলেও কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সুতরাং এই নির্বাচনে থাকা অর্থহীন।

তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ, তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। মারধর খেয়ে আহত হয়েছেন। আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আজকে সুষ্ঠু পরিবেশ ও ভোট দেওয়ার পরিবেশ না থাকার কারণে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ভোট বর্জন ঘোষণা করছি। কারণ এভাবে জোরপূর্বক ভোট দিয়ে কোনও ফল আসবে না। এটি এক ধরনের প্রহসন। তাই প্রহসনের এ নির্বাচন আমি বর্জন করলাম।

ফেসবুক লাইভে নির্বাচন বর্জন করেন ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়াই করা অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। তিনি বলেন, হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা ও ভোটের পরিবেশ না থাকায় ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একপেশে নির্বাচন, গফরগাঁওয়ে কোনও নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকায় সিল মারছে এবং সেটি উৎসব করে ফেসবুকে লাইভ করছে। প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক ও অনিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে এবং প্রশাসনের মদদে এসব ঘটানো হয়েছে, তাই ভোট বর্জন করছি।

গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত জাল ভোটের কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি এবং প্রমাণও পাইনি। একজন ভোটার গোপন কক্ষের বাইরে ভোট দিয়েছে। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব ছিল সেটি করতে না দেওয়া। সে কারণে মদিনাতুল উলুম কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে প্রত্যাহার করে এবং নৌকার প্রার্থীর এজেন্টকে সরিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তা বাজার/জে আই