যবিপ্রবি শিক্ষিকার স্বামীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষিকার স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ওইদিন বিকেলে বিষয়টি প্রকাশ হলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই শিক্ষিকাকে স্বামী-সন্তান নিয়ে ক্যাম্পাস ডরমেটরি ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহকর্মীর নাম সখিনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই ম্যাডামের স্বামী আমাকে বকাঝকা ও গালিগালাজ করতেন। অতিষ্ঠ হয়ে এক পর্যায়ে আমি কাজ ছেড়ে দেবো বলে সিদ্ধান্ত নিই।’

সখিনা খাতুন আরও বলেন,‘ঘটনার দিন সকাল ৯টার দিকে কোন কিছু না বলে প্রকাশ্যেই তিনি আমাকে ভিসি স্যারের বাসভবনের সামনে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন।’

ওই সময়ে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী কয়েকজন কর্মচারীও বলেন, লাঠি দিয়ে মারতে মারতে সখিনাকে মাটিতে ফেলে দেন শিক্ষিকার স্বামী মাজহারুল ইসলাম। এ সময় তার চিৎকারে তারা এগিয়ে এলে মাজহারুল বাসায় চলে যান। পরে কর্মচারীরা সখিনাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেন।

শিক্ষিকা শাহানাজ আক্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার স্বামী একটু বদমেজাজি। হয়তো সখিনার কোন কথায় উত্তেজিত হয়ে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

বিষয়টি নিয়ে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ওই শিক্ষিকা। এ সময় ডরমেটরি ছাড়ার নির্দেশ সর্ম্পকে শাহানাজ আক্তার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশ আমাকে মানতেই হবে।’

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক শাহানাজ আক্তার চাকরি সূত্রে ক্যাম্পাসের ডরমেটরিতে স্বামী সন্তান নিয়ে দেড় বছর ধরে বসবাস করছেন। তার স্বামী মাজহারুল ইসলাম পূবালী ব্যাংক যশোর শাখার কর্মকর্তা।

এই দেড় বছর সখিনা খাতুন নামে চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের এক বিধবা নারী ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। দুই সন্তানের মা সখিনা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল জানান, সখিনাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হয়েছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাঠির আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেধেছে এবং টিস্যু খুবই খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন,‘আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই শিক্ষিকাকে স্বামী সন্তানসহ ডরমেটরি ত্যাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘যেহেতু শিক্ষিকার স্বামী ঘটনাটি ঘটিয়েছেন,তাই তার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নাই। তবে নির্যাতিত গৃহকর্মী
মামলা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।’

বার্তাবাজার/এইচ.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর