নারীকে রঙিন সাজে সাজাতে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী

পহেলা বৈশাখকে ঘিরে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী। বাঙালির প্রাণের উৎসবে নারীকে রঙিন সাজে সাজাতে ও রুচিশীল শাড়ির চাহিদা মেটাতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন কারিগররা। নতুন স্বপ্ন,উদ্যম আর প্রত্যাশার আবির ছড়ানো উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় এই উৎসব। সকল পাওয়া না পাওয়ার বেদনাকে ধুয়ে মুছে,আকাশ-বাতাস ও প্রকৃতিকে অগ্নিস্নানে সূচি করে তুলতেই আবার আসছে পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সিরাজগঞ্জের হাজার-হাজার তাঁতীরা এখন ব্যস্ত নানা রংয়ের শাড়ি তৈরীতে। দিনরাত খটখট আওয়াজে মুখরিত জেলার এনায়েতপুর,বেলকুচি,শাহজাদপুর এবং সয়দাবাদের তাঁতপল্লীগুলো।

বৈশাখের শাড়ীতে নানা নকশা আর বুনণে বাঙ্গালীয়ানার ছাপ না থাকলেই নয়। তাই তো সবার মন ভরাতে তৈরি করা হচ্ছে ঢাক ঢোলসহ নানান প্রতীক সম্বলিত নকশার শাড়ী। বাহারী ডিজাইন ও উন্নত সুতা দিয়ে তৈরী করায় ঢাকা,চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সিরাজগঞ্জের শাড়ীর ব্যাপক চাহিদা। ২শ থেকে ২ হাজার টাকা দামের এসব শাড়ী কিনতে তাঁতী বাড়িতে ভীড় করছেন ব্যাপারীরা। এ উৎসবে সিরাজগঞ্জে প্রায় ৫ কোটি টাকার শাড়ী বেচাকেনার আশাবাদ তাঁতীদের। বৈশাখকে ঘিরে সিরাজগঞ্জের শাড়ীর সুনাম ছড়িয়ে পড়ুক দেশ-বিদেশে এমনটাই চাওয়া এ অঞ্চলের তাঁতীদের। সিরাজগঞ্জের তৈরি রং-বেরঙের পোষাকে বর্ণিল হয়ে উঠবে সিরাজগঞ্জসহ গোটা দেশ। এমন প্রত্যাশাই তাদের। এ বিষয়ে কাপড় ব্যাপারী আলাউদ্দিন ও নুর মোহাম্মদ জানান,আমরা শাহজাদপুর থেকে সয়দাবাদে এসেছি বৈশাখী কাপড় কেনার জন্য। খুচরা বাজারে বৈশাখের বাজার এখনও লাগেনি। তবে পাইকারী বাজারে কাপড়ের চাহিদা আছে প্রচুর।

প্রতি বছর ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা কাপড় কিনে তা খুচরা বাজারে বিক্রি করি। তাতে আমার ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাভ হয়। কাপড় ব্যবসায়ী আলতাব হোসেন বলেন, সিরাজগঞ্জের তৈরি বৈশাখী শাড়ীর কদর দেশ জুড়ে রয়েছে। যেহেতু সিজেনাল ব্যবসা এজন্য কাপড় তৈরী করতে প্রচুর টাকা লাগে। কোন ব্যাংক থেকে অল্প সুদে আর্থিক সহায়তা পেলে চাহিদা পূরণ করতে পারতাম। এজন্য সরকারের
সহযোগিতা কামনা করছি। কাপড় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, আমাদের দেশে বৈশাখী শাড়ীর যে চাহিদা তার বেশি ভাগ আমরাই পূরণ করি। আমাদের এখান থেকে গাউছিয়া,কুষ্টিয়ার পোড়াদহ,বাবুর হাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসে আমাদের এখানে। সিরাজগঞ্জের তৈরী বৈশাখী শাড়ি দেশের প্রায় ৭০ ভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে। আমরা বাপ চাচারা মিলে প্রায় ৩ কোটি টাকার শাড়ী বিক্রি করবো। শাড়ীর দামটা একটু বেশি। তবে সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর পরিচালক টি এম রিজভী এ ব্যাপারে বলেন, এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে রঙ এবং সুতার বাজারকে সরকারের মনিটরিং করতে হবে। এই শিল্পের সাথে জড়িতদের বিনা শর্তে ঋণ দিতে হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর