বিয়ে করেই স্ত্রীদের নামানো হতো দেহ ব্যবসায়!

বিয়ে করাই নেশা যেন জুবায়ের হোসেন হৃদয়ের (৩৪)। নেশা বললে ভুল হবে, বিয়ে করা পেশা তার। কেননা বিয়ে করেই স্ত্রীদের দেহ ব্যবসায় নামিয়ে দিতেন তিনি। আর এ কাজে আরও কয়েকজন নারী-পুরুষ তাকে সাহায্য করতেন। অবশেষে হৃদয়ের এক স্ত্রীর করা মামলায় তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলা করা নারীকে পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেন হৃদয়। এরপর তাকে বাধ্য করে দেহ ব্যবসায় নামান তিনি। অবশেষে গত শনিবার ওই নারী মামলা করলে হৃদয়ের সহযোগী শান্তা আক্তার ও তার স্বামী রাজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজুকে গ্রেপ্তারের পর পালিয়ে যান হৃদয়।

অভিযুক্ত জুবায়ের হোসেন হৃদয়ের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। আর রাজু মিয়া কিশোরগঞ্জের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া বাসিন্দা সাধু মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতদের গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হৃদয়ের স্ত্রী অভিযোগ করেন, হৃদয় দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ও সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন হৃদয়। গত শুক্রবার রাতে ভৈরব শহরের আমলাপাড়া এলাকার একটি বাসায় তাকে নিয়ে যান হৃদয়। সেখানে তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এতে রাজি না হলে হৃদয় তাকে নির্যাতন করেন। সেখান থেকে পালিয়ে এসে শনিবার ভৈরব থানায় মামলা করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস আগে আমার সঙ্গে হৃদয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসায় থাকতাম। কয়েকদিন আগে জানতে পারি হৃদয় এর আগে একাধিক বিয়ে করেছে। এরই মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে গত সোমবার আমাকে ভৈরবে নিয়ে আসা হয়। এখানে কমলপুর এলাকার হৃদয়ের এক বন্ধুর বাসায় আমাকে নেওয়া হয়। গত শুক্রবার রাতে শহর ঘোরানোর কথা বলে আমাকে আমলাপাড়ার একটি বাসায় নিয়ে যায় হৃদয়। ওই বাসায় আগে থেকেই অবস্থান করেছিল হৃদয়ের সহযোগী রাজু। এরপর অপরিচিত এক ব্যক্তির রুমে আমাকে ঢুকিয়ে দিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মারধর করা হয়।’

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘সেখানে অপরিচিত এক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ ও সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। পরে গোপনে এসব কথা আমার পরিবারকে জানাই। গত শনিবার সেখান থেকে পালিয়ে এসে থানায় মামলা করি। পরে পুলিশ রাজুকে গ্রেপ্তার করলে হৃদয় পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘একাধিক বিয়ে করে স্ত্রীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করান হৃদয়। কখনো পুলিশ আবার কখনো সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে হৃদয়। আমি তার কঠোর বিচার চাই।’

ভৈরব থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেল আহমেদ বলেন, ‘গৃহবধূ মামলা করার পর হৃদয়ের সহযোগী রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় হৃদয় পালিয়ে যায়। আসামিরা মূলত প্রতারক। তারা বিয়ে করে স্ত্রীদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি করায়। খদ্দেরদের পুলিশ ও সিআইডির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে প্রতারণা করছে এই চক্রটি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

বার্তা বাজার/এম.সি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর