যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে বিমান উড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা

এ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে বিমানের জন্য সবারই একটা টান চলে আসে এখনকার দিনে। সেই আকাশে উড়ার স্বপ্ন থেকেই যাত্রা শুরু তাদের।

১৭ নভেম্বর ২০১৮, বিশ্বের সর্ব বৃহৎ আরো ডিজাইন প্রতিযোগিতা অ্যামেরিকান ইন্সিটিটিউট অফ অ্যারোন্টিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস এর ডিজাইন বিল্ড অ্যান্ড ফ্লাই প্রতিযোগিতা-২০১৯ এর ১ম বাছাই পর্বে সমগ্র বিশ্বের ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্য হতে উত্তির্ণ ১১৩ টি টিমের মধ্যে ৯১তম এবং বাংলাদেশ হতে একমাত্র টিম হিসেবে বাছাই হয় মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এর আরোন্টিক্যাল বিভাগ এর নাফিস-তানজীম-রাদ এর ড্রিমার্স ফিন।

টীমে আরও রয়েছে জাফি, রোমিও, নাঈম, বাসিত, নাভিদ, আনাস, সামি, মিম, সামিন, রুবেল, আরাফাত, রিয়াজুল, রাগিব, সায়েম, আকিব, আবির, নাফিস, ফাহিম, পান্থ, নাকিব, সাফিন মোট ২৪ জন।

তারপর শুরু হয় নির্দিষ্ট মিশন সফল করতে সক্ষম বিমান তৈরী এর পালা। মিশন হিসেবে এই বার কিছু নতুনত্ব সংযুক্ত হয়েছে। তাদের তৈরী করতে হবে দুরনিয়ন্ত্রিত এমন একটি বিমান যা কিনা তার ডানা ভাঁজ করতে সক্ষম, সাথে সংযুক্ত রাখতে হবে মিসাইল সদৃশ বস্তু যা কিনা নির্দিষ্ট স্থানে বিমান হতে ফেলে দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে, আরও থাকতে হবে একটি র‌্যাডম যা নির্দিষ্ট বেগে ঘূর্ণায়মান থাকবে তাছাড়াও এই ৫ ফুট দীর্ঘ ৭ কেজি বিমানটির অবতরণ এর জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ১০ ফুট।

এই বিশাল এবং কষ্টসাধ্য মিশন প্রোফাইল নিয়ে কাজে নেমে পরে ড্রিমার্স ফিন। হাতে সময় খুব কম ফেব্রুয়ারি এর ২২ এর মধ্যে বিমান তৈরি এবং রিপোর্ট সাবমিট করলে তবেই বাছাই পর্বের দ্বিতীয় ধাপ পাড় করবে তারা।

এই রাস্তাটি তেমন মসৃণ ছিল না, আসে নানা বাঁধা বিপত্তি ডিজাইনে সমস্যা, নিদৃষ্ট যন্ত্রাংশ না পাওয়া যাওয়া এমনকি কিছু যন্ত্রাংশ দেশের বাইরে থেকে আনাতে হয়। তবু কাজ থেমে থাকার নয়।

নির্ধারিত সময়ের আগেই বিমান উড়ে বাংলাদেশের আকাশে সাবমিট হয় ডিজাইন রিপোর্ট। বাছাই এর দ্বিতীয় পর্বটিও খুব ভালভাবেই পাড় হয়ে যায়। এবং ডাক পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনার টুয়সন শহরে বিমান উড়ানোর জন্য।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে তাদের তৈরী বিমান উড়ানোর স্বপ্নে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসার জন্য অপেক্ষা করছে তারা আগামী ১১-১৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়বে তাদের তৈরী বিমান। যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে তাদের তৈরী বিমান ২০১৩ সালের পর আবার ও ৬ বছর পর বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে।

তারা জানায় তাদের প্রতিটি কাজে একান্তভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন তাদের বিভাগীয় প্রধান এয়ার কমোডর আবদুস সালাম, উইং কমান্ডার দেশপান্ডে, লেকচারার নাফিজ আহমেদ ও লেকচারার দেবানন্দ ভদ্র দীপ্ত।

সবকিছু এখন পর্যন্ত ঠিকই চলছে, ইনশাল্লাহ খুবই শীঘ্রই তাদের স্বপ্ন আকাশে থাকবে, আর নিচে থেকে বসে বসে আমরা বিস্মিত হয়ে দেখবো দেশের তৈরী, দেশের ছেলেমেয়েদের তৈরি মডেল বিমান। বিভিন্ন দেশের উন্নতি দেখে আফসোস করতে থাকার দিনটার সমাপ্তি ঘটছে, হয়তো একটু ধীরে, তবে মনে রাখুন আপনার দেশের ছেলেমেয়েরাই আপনাদের আফসোসের সমাপ্তি ঘটছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর