দেশে ফিরে নতুন সংকটে সৌদিফেরত সুমি

সম্প্রতি দেশে ফিরে আসেন সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার সুমি আক্তার। কিন্তু দেশে ফিরে তিনি পড়েছেন নতুন সংকটে। দেশে এসে তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কেননা, শারীরিক অসুস্থতা ও স্বামী নুরুল ইসলামের হুমকি-ধমকিতে তার প্রতি মুহূর্ত কাটছে শঙ্কায়।

জানা গেছে, সৌদি আরবে করুণ পরিণতির জন্য স্বামীকে দায়ী করে সুমি আর তার সঙ্গে সংসার করতে চাইছেন না। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে নুরুল ইসলামসহ প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সুমির পরিবার। একই সঙ্গে সরকারের কাছে সুমির কর্মসংস্থান চায় পরিবারটি।

সুমি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতি সেনপাড়ার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গত ১৫ নভেম্বর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুমি এখন তার বাবার বাড়িতেই আছেন।

গত শুক্রবার সেখানে গিয়ে জানা যায়, বাড়ি ফেরার পর থেকেই সুমি ঘরের মধ্যেই সময় কাটান। কারো সঙ্গে তেমন কথা বলছেন না। এছাড়া শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। চোখের কর্নিয়া সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এর মধ্যে নতুন করে স্বামী নুরুল ইসলাম তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সুমি জানান, প্রায় দুই বছর আগে তিনি গাজীপুরে মামার বাড়িতে থেকে সেখানকার এক সোয়েটার কারখানায় কাজ শুরু করেন। মামি শরিফা খাতুন আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার নুরুল ইসলামের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।

একদিন বাইরে গেলে তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যান নুরুল ইসলাম। সাত-আট দিন আশুলিয়ার এক বাড়িতে আটকে রেখে অপ্রাপ্তবয়স্ক সুমির জাল জন্ম সনদ তৈরি করে জোর করে তাকে বিয়ে করেন। নুরুল মাদকচক্রসহ বিভিন্ন অপরাধচক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারপরও কষ্ট করে তার সংসার শুরু করেন সুমি। কিন্তু স্বামী তার বয়স ২৫ বছর দেখিয়ে পরিচিত দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেন।

সুমি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনও আমাকে সেই দুর্বিষহ নির্যাতনের দিনগুলো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাভাবিক হতে পারছি না। আমি আর নুরুলের সঙ্গে সংসার করতে চাই না। সৌদিতে গিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি তিনি আমাকে দালালদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন সংসার করতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সরকার আমাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি যেন নতুন করে আমার ভবিষ্যৎ গড়তে পারি সেই সহযোগিতা সরকারের কাছে চাইছি।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর