মাইগ্রেনের ব্যথা কমাবে যেসব খাবার

মাইগ্রেনের সমস্যা আমাদের অনেকেরই রয়েছে। মাইগ্রেন হলো একটি ভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা। মেয়েদের মধ্যে এ রোগ যেমন দেখা যায় তেমনি পুরুষের বেলায়ও দেখা যায়। মাইগ্রেনে আক্রান্ত রোগীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের এই রোগ সম্পর্কে জানা জরুরি। মাইগ্রেন যে শুধু ওষুধে নিয়ন্ত্রণ হয় তা কিন্তু নয়। কিছু খাবার আছে যা খেলেও মাইগ্রেনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

কেন মাইগ্রেন হয়?
মাথার ভেতরের রক্ত চলাচলের তারতম্যের কারণে মাইগ্রেন হয়। রক্ত চলাচল কমে গেলে হঠাৎ করে চোখে সব অন্ধকার দেখা যায় এবং পরে রক্ত চলাচল হঠাৎ বেড়ে গিয়ে প্রচণ্ড মাথাব্যথার অনুভূতি তৈরি হয়। চকোলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে।

মাইগ্রেনের সমস্যা হলে মাথার এক পাশ বা দুই পাশজুড়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।এছাড়া বমিভাব, বমি, চোখব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখাসহ ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। মাইগ্রেনের সঙ্গে জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসের সম্পর্ক রয়েছে। কিছু খাবার আছে যা খেলে আপনার মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করে যেসব খাবার

বাঁধাকপি
বাঁধাকপি-বাঁধাকপির ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা ৩ ও ফাইবার, বাঁধাকপির স্যুপ ও স্মুথি বা সালাদ। এসব খাবার, মাইগ্রেনের ব্যথা কমান। এছাড়া রয়েছে গাজর ও মিষ্টি আলু। গাজর ও মিষ্টি আলুতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। আরও রয়েছে ভিটামিন সি, বি২, বি৬, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস আছে, যা ব্যথা ও প্রদাহ দূর করে।

মাশরুম
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আরেকটি বিশেষ খাবার হচ্ছে মাশরুম। মাশরুমে ম্যাগনেশিয়াম ও রিবোফ্লোবিন থাকায় মাইগ্রেনের স্থিতি ও পুনরাবৃত্তি রোধ করে।

চেরি
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চেরি ফলের জুসও ভালো বেশ উপকারী। চেরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনলস নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। চেরি স্ট্রেস দূর করে, মাথাব্যথা কমায়।

অরগান মিট
ভ্রমণে গেলে অনেকের মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। তারা খেতে পারেন অরগান মিট। ভ্রমণের সময় এই অরগান মিট রাখতে পারেন বা যাত্রার আগে খেতে পারেন।

চিংড়ি ও আদা চা
চিংড়ির অ্যাসটাজ্যানথিন মাইগ্রেনের অ্যাটাক কমায়। এছাড়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে আদা চা বেশ কাজে দেবে।

মাইগ্রেনের সমস্যা যা খাবেন না

চকোলেট, অ্যালকোহল (ওয়াইন), ডিম, দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য, পেঁয়াজ, টমেটো, সাদা রুটি মাইগ্রেনের অ্যাটাকের সময় ভুলেও খাবেন না। ব্যথা হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

বারবার মাইগ্রেনের আক্রমণ কমানোর জন্য পিজোটিফেন, অ্যামিট্টিপটাইলিন, বিটাব্লকার-জাতীয় ওষুধ কার্যকর। মাথাব্যথা শুরু হলে প্যারাসিটামল, এসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক-জাতীয় ওষুধ ভালো। বমির ভাব কমানোর জন্য মেটোক্লোর প্রোমাইড, ডমপিরিডন-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব ওষুধে মাথাব্যথা না কমলে সুমাট্টিপটান, আরগোটামাইন-জাতীয় ওষুধে অনেক সময় যথেষ্ট স্বস্তি পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই বারবার এ রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

মনে রাখবেন, সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়, দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় রক্তক্ষরণ প্রভৃতি কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চক্ষুবিশেষজ্ঞের পাশাপাশি স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর