কুড়িগ্রামে লবণের গুজব ঠেকাতে পুলিশের মাইকিং ,১৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

কুড়িগ্রামে মঙ্গলবার(১৯ নভেম্বর) বিকেল থেকে গুজবের কারণে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে লবনের।

এতে হাট-বাজারগুলোতে ভীড় করে লোকজন অতিরিক্ত লবন কিনতে শুরু করলে পেঁয়াজের মত দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে লবনের মূল্য।প্রশাসনের পক্ষ থেকে গুজবে কান না দিতে বলা হয়েছে।চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচারণা।

সদরের যাত্রাপুর ও কাঁঠালবাড়ী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় খোলা ১৬ টাকার কেজি দরের লবন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অপরদিকে ৩৮ টাকার প্যাকেটজাত আয়োডিনযুক্ত লবন বিভিন্ন জায়গায় ৪০ থেকে ৭০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়।

একেকজন ভোক্তা একাধিক প্যাকেট লবন কিনতে গিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। কেউ ব্যাগ নিয়ে, কেউ বস্তা নিয়ে দোকানগুলোতে ভীড় জমান।এই ফাঁকে মূল্য বাড়িয়ে দেয় সব ব্যবসায়ীরা।

এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে সন্ধায় অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে জরিমানা করা হয় বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ভুরুঙ্গামারীতে ২জনকে ৫৫ হাজার টাকা ও নাগেশ্বরীতে ১১জনকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

প্রশাসন থেকে ‌দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করায় বাজারে লবনের মূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে জনমনে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে।

এদিকে গুজবের খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পুলিশ সুপার পদোন্নতী প্রাপ্ত) মেনহাজুল আলম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মাহফুজার রহমানসহ একাধিক কর্মকর্তা শহরের পৌরবাজার, জিয়াবাজার, খলিলগঞ্জ, ত্রিমোহণী ও কাঁঠালবাড়ী বাজারে তাৎক্ষণিক অভিযান চালান।

পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিং করে প্রচারণা চালায় পুলিশ প্রশাসন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অতিরিক্ত লবন কেনার প্রবণতা বন্ধ হয়ে যায়।

জানতে চাইলে এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, দেশে লবনের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষ মেট্রিকটন। সেখানে মজুদ রয়েছে ১৮ লক্ষ মেট্রিকটন।

এছাড়াও চলতি মাসে লবনের চাহিদা ছিল এক লক্ষ মে.টন। মজুদ রয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ মে.টন।এখানে ঘাটতির কোন সুযোগ নেই। বর্তমানে আয়োডিনযুক্ত লবন মানভেদে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।

গুজব নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানান, সদরের সবকটা ইউনিয়নে চেয়ারম্যানরা নির্দেশনা অনুযায়ী গুজব ঠেকাতে বাজারগুলোতে মাইকিং করে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে যে গুজব তৈরী হয়েছিল তা এখন নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম জানান, গুজব সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীরা যাতে লবনের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

গুজব ঠেকাতে সকলকেই সচেতন হতে হবে এবং একযোগে এদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এরপরও কেউ চড়ামূল্যে লবন বিক্রি করছে জানলে পুলিশকে তথ্য দিন আমরা ব্যবস্থা নিব।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর