রাজশাহী চারলেন সড়কের কাজ শেষ না হতে ফাটল, তরিঘরি করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিলেন

৪শ’ ৩৮কোটি টাকা ব্যায়ে রাজশাহী-নওগাঁ চার লেন সড়কের (৩৪ ফুট প্রশস্ত) কাজ শেষ না হতেই রাস্তায় নওগাঁয় চারটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি জানা জানি হলে দ্রুত ঠিকারদারের লোকজন সন্ধ্যায় মাটি দিয়ে তড়িঘড়ি ঢেকে দিয়ে ধামাচাপা চেষ্টা করেছেন এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সওজের কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদার মনির সিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় এই ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তড়িঘড়ি করে ফাটল স্থানে কাঁচা মাটির প্রলেপ দিতে থাকেন এবংছবি তুলতে গেলে ছবি তুলতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন ঠিকাদারের লোকজন। শনিবার জেলার মান্দার চৌদ্দ মাইল মোড় হতে সাবাইহাট পর্যন্ত এক কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত চারটি ফাটল চোখে পড়ে। এই ঘটনার পর রাস্তা ফাটলের ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।নূর খাতুবুল আলম তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেন, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক দুইলেন থেকে চার লেনে উন্নীতরা কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই মান্দা উপজেলার চৌদ্দ মাইল মোড় হতে সাবাইহাট পর্যন্ত এক কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত চার জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সন্ধ্যার পর একটি ট্রাক যার নং ঢাকা ২৫৩/য় এবং মোটর সাইকেলযোগে ঠিকাদারের লোকজন কাদা মাটি দিয়ে লেপে দেয়ার চেষ্টা করছে। এ সময় ছবি তুলতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন বাধা দেয়। এদের মধ্যে নাঈম নামে একজন ছবি ও ভিড়ি অথবা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

সরকারে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে এই অনিময়ের সাথে ঠিকাদার ও অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন।নওগাঁ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৪ মে নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ উদ্বোধন করেন নওগাঁ সদর আসনের সাবেক সাংসদ ও জেলা আ’লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুবুর রহমান, নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামাল অ্যাসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমকেএম কামাল উদ্দিন, নওগাঁ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল উপস্থিত ছিলেন। আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের (রাজশাহী জোন) আওতায় নওগাঁ সদর উপজেলার ঢাকা মোড় থেকে রাজশাহী বিমানবন্দর এলাকা পর্যন্ত নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের মোট ৭৪ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ করা হবে।

এই ১২টি প্যাকেজে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ৪শ’ ৩৮কোটি টাকা। এর মধ্যে ২শ” ৮৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ৯টি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে নওগাঁ সওজ বিভাগ। বাকি তিনটি প্যাকেজের বাস্তবায়ন করছে রাজশাহী সওজ বিভাগ। ১৮ ফুট প্রশস্ত এই সড়কটি ৩৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্তের শুরু করা হয়। নওগাঁর সামাজিক সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু জানান, রাস্তায় ধার ফেটে যাওয়ায় অর্থ হচ্ছে ঠিক মতো রোলিং করা হয়নি। এতে সহজেই প্রমাণিত হয় সওজ কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি না থাকা বা অন্য কারণে ঠিকাদার এই কাজের অনিয়ম করার সুযোগ পেয়েছেন।

তবে ঠিকাদার মনির সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কাজে কোন অনিয়ম হয়নি দাবি করে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক জানান, এটি খুব সামান্য ছোট ব্যাপার। দ্রুত তা সমাধানের জন্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা
দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান ইত্তেফাককে জানান, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর