তাড়াশ আমবাড়িয়া গণহত্যা দিবস আজ

আজ ১৩ নভেম্বর বুধবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ১৪ জন নিরিহ গ্রামবাসিকে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যরা ওই স্থানে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম ভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এ দিবস উপলক্ষে স্থানীয় পর্যায়ে কোন আয়োজন না থাকায় দিবসটি নিরবেই কেটে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কবি ও সাংবাদিক হাদিউল হৃদয় জানান, ১৯৭১ সালের ১১ই নভেম্বর তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এ বুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর পরাজয় ঘটে।

এ ছাড়া এ যুদ্ধে হানাদার কাহিনীর প্রায় এক কোম্পানী সৈন্য ও তাদের দোষর ৫০/৬০ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধোদের হাতে নিহত হয়। এরই প্রতিশোধ হিসাবে হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বও তাড়াশ উপজেলার আমবারিয়া গ্রামে ১৪ জনকে একত্রিত করে নির্মম নির্যাতন ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।

গণ কবরের শহীদেরা হলেন, আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত কিয়ামত আলীর ছেলে শহীদ ইয়ার মোহাম্মাদ, মৃত কায়েম উদ্দিনের ছেলে শহীদ মোক্তার হোসেন, মৃত নাজির উদ্দিনের ছেলে শহীদ আব্দুর রহমান, মৃত লাল চাঁন মন্ডলের ছেলে শহীদ মেহের আলী, মৃত রজব আলী সেখের ছেলে শহীদ সুলতান সেখ, মো. মিলন প্রামাণিকের ছেলে শহীদ ফজলার রহমান, শহীদ সুলতান শেখের ছেলে শহীদ মফিজ উদ্দিন সেখ, মৃত হুজুর আলী প্রামাণিকের ছেলে শহীদ কিয়ামত আলী প্রামাণিক, মৃত হুজুর আলী প্রামাণিকের আরেক ছেলে শহীদ মজিবর রহমান, মৃত ইজ্জত আলী প্রামাণিকের ছেলে শহীদ ওসমান আলী প্রামাণিক, মৃত এপাত আলী প্রামাণিকের ছেলে শহীদ দেছের আলী প্রামাণিক, মৃত তাজু প্রামাণিকের ছেলে শহীদ আমিন উদ্দিন প্রামাণিক, মৃত বাছের ফকিরের ছেলে শহীদ জুব্বার ফকির, কাঁস্তা গ্রামের ধনাই প্রামাণিকের ছেলে শহীদ ইয়াছিন আলী (তাঁর শহীদ হওয়ার তারিখ ২৯ এপ্রিল ১৯৭১)। তাদের ১৩টি কবর এক সারিতে দেওয়া আছে।

তিনি বলেন,তাড়াশের সাবেক এমপি গাজী ম.ম আমজাদ হোসেন মিলন ২০১২-১৩ অর্থ বছরে এলজিইডি‘র অর্থায়নে ১৩টি কবরের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেন। এরপর আর এর কোন উন্নয়ন করা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, আমবাড়িয়ার ঘটনা এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায়। তারপরেও এখানে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, সরকারীভাবে আমাদেও এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা নেই। ফলে আমরা সরকারি ভাবে দিবস পালন করতে পারি না। তবে এর গুরুত্ব অনুধাবণ কওে এলাকাবাসি এর আয়োজন করলে যথাসাধ্য পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর