জাবির উপাচার্য অপসারণ ও হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দূর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্যের অপসারণ এবং শিক্ষার্থীদের হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ‘দূর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় মিছিলটি কলা ও মানবিকী অনুষদ(নতুন কলা) সংলগ্ন মুরাদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে পুরাতন রেজিষ্ট্রার ভবনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমানের সঞ্চালনায় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, এই আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করার আন্দোলন।

৫ নভেম্বর ছাত্রলীগের হামলার পর শতশত শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানাতে হল থেকে বের হয়ে এসেছিল। যদি ভূল পথে হাটি তাহলে হল খুলে দেওয়া পর আবারো শিক্ষার্থীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষের এই আন্দোলনে অংশ নিবে।তাহলে কালক্ষেপন করে লাভ কী ? আমরাদের সমাধানের পথে আসতে হবে।

ভূল পথে না হেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনের নিয়ে সমাধানের পথে আসতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কাছে দূর্নীতির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তার তদন্তের দ্রূত শুরু করতে হবে। তদন্তে উপাচার্য নির্দোষ প্রমানিত হলে তিনি নিজ পদে বহাল থাকবেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপাচার্যের তদন্তে সহায়তার করার সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় যতই বিলম্বে খুলে দেওয়া হক না কেন যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্তের সদিচ্ছা না থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা আবার মাঠে নেমে আসবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় আবারো সংকটের দিকে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় চলমান সংকট দ্রূত নিরসনের দাবি জানান ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান।

আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন,বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও ইউজিসি থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।তারা তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিবে বলে জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কে অনিরাপদ করে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে, হল ভ্যাকেন্ড করে দিয়েছে। সন্ত্রাসী হামলা, মামলা দিয়ে আন্দালন দমন করার পথকে অস্বীকার করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।

অভিযোগ আছে ৫ নভেম্বরের জরুরী সিন্ডিকেটে ৭ জনের মধ্য ২ জন সিন্ডিকেট সদস্য হল ভ্যাকেন্ডের বিরোধিতা করলেও হল ভ্যাকেন্ড করা হয়।তাদের দাবি হল ভ্যাকেন্ডের মত পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়নি।

ছাত্র ইউনিয়নে জাবি সংসদের সহ-সভাপতি ওয়ালিউর রহমান সান বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলনে তারা হামলা চালিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল ভ্যাকেন্ড করেও আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন দমাতে পারেননি। শুধু দূর্নীতি নয়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে তার জন্যও এই উপাচার্যকে পদত্যাগ করা উচিৎ।

এক সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলাকে গনঅভ্যুত্থান বলে উপাচার্য ৬৯এর গনঅভ্যুত্থানকে অপমান করেছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, আমরা আন্দোলনের শুরুতে তদন্ত কমিটির দাবি করে। যখন দেখলাম প্রশাসনের দূর্নীতির তদন্ত করার কোন ইচ্ছাই নাই তখন আমরা এই উপাচার্যের অপসারণ দাবি জানাই। তারপর আমাদের শান্তিপূর্ণ অবরোধে শিক্ষক-কর্মচারী তারপর ছাত্রলীগ হালমা করলো। তারপর আমাদের থাকার জায়গা কেড়ে নেওয়া হলো খাবারের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হলো। উপাচার্যকে উদ্দেশ্য তিনি বলেন, থাকার যায়গা নষ্ট করে খাবার কেড়ে নিয়ে, হামলা করে আন্দোলন দমানো যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগকে দিয়ে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে ক্যাম্পাস বন্ধ করেছে দাবি আন্দোলনকারীদের।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, অধ্যাপক শামিমা সুলতানা, অধ্যাপক তারেক রেজা, অধ্যাপক জামালুদ্দিন রুনু, অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাবির সাংস্কৃতিক জোট ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতা কর্মীরা।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর