চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার এ সন্ত্রাসী হামলা; টালবাহানার পরে মামলা নিলো মিরপুর থানা

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সমাজের অবহেলিতদের খুঁজে এনে নিজেদের টাকা খরচ করে মানুষের কল্যানে কাজ করে আসছিলেন মিল্টন সমাদ্দার। দক্ষিণ পাইপাড়া কল্যাণপুরে ৪৬২ নং বাসায় পরম মমতায় গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের বৃদ্ধাশ্রমটি।

সম্প্রতি কল্যাণপুরের এই বৃদ্ধাশ্রমে হামলা চালিয়ে চাঁদা দাবী করেছে সন্ত্রাসীরা। থানায় মামলা দিতে গিয়েও হয়্রানিতে পড়েন আশ্রমের পরিচালক। তবে অভিযুক্তের পরিবার অভিযোগ অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত মামলা হয়েছে মিরপুর মডেল থানায়।

সরেজমিন বৃদ্ধাশ্রমটিতে গিয়ে দেখা যায়, এর বাসিন্দাদের ভিতরে সন্ত্রাসী হামলার ভীতি কাটছে না। এখানে আশ্রয় পাওয়া ৫১ জন বয়োঃবৃদ্ধ সম্প্রতি এখানে চালানো সন্ত্রাসী হামলার ভয়ংকর স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না এখনো। তাদের ভিতরে এক অজানা শংকা ও নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে চলছে বুঝা গেছে।

বাসিন্দাদের একজন গণমাধ্যমকে জানান, ‘এতগুলি অসহায় মানুষকে যে ব্যক্তি দেখাশোনা করছে, তার কিছু হয়ে গেলে এদেরকে কে দেখবে?’ আর একজন বয়োঃবৃদ্ধ বললেন, ‘আমাদেরকে মেরে ফেললেইবা আমরা কি করতে পারবো?’

এব্যাপারে চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার এর পরিচালক মিল্টন সমাদ্দার জানান, সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে চাঁদা না দেওয়ার কারণে। বার বার চাঁদা দাবী করা হয়েছে তার কাছে। নিরাপত্তার জন্য থান্য গিয়েও হয়্রানির শিকার হতে হয়েছে। অনেক দেনদরবারের পরে মামলা নিয়েছে মিরপুর থানা।

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক বাবা-মা যাদেরকে তাদের সন্তানরা ত্যাগ করেছে, এই আশ্রমে তাদেরকে রাখার কারণে এলাকার লোকজন ভাবছে বোধহয় এখানে প্রচুর টাকা-পয়সা আসছে। যার জন্য সন্ত্রাসীরা চাচ্ছে তাদেরকে তাদের চাহিদা মত নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়া হোক। এবার যারা হামলা করেছে, তারা বেশ কয়েকবার টাকা দাবী করে গেছে। না দেয়ায় আশ্রম ভাংচুর সহ আমাকেও আহত করেছে।

চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার এর উপদেষ্টা আকাশ আহমেদ বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এটাই হচ্ছে বড় ব্যাপার। আর এখন যদি পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহায়তা করে, মানে এ ধরণের ‘ডিস্টার্বেন্স’ না হয় এবং যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশবে যায়, তবে বৃদ্ধাশ্রমটি আমরা সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাদন ফকির বলেন, চাঁদা চাইছে, পরে দেয় নাই তাই ভাংচুর করছে, মাইরধর করছে- এ ধরণের একটা অভিযোগ এসেছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র হলে অভিযোগপত্র দাখিল করবো।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন মামলার প্রধান আসামী রুবেলের বাবা। তিনি বলেন, রুবেলের শালাদের সাথে নাকি গ্যাঞ্জাম হইছে, রুবেল এখানে কিচ্ছু ছিলনা। রুবেলের অপরাধ হলো রুবেল ধরলো না কেন?

বৃদ্ধাশ্রমটিকে রক্ষায় প্রশাসন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ, ২০১৯ তারিখে চাঁদার দাবীতে সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধাশ্রমটিতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় আশ্রমের পরিচালক মিল্টন সমাদ্দারকে আহত করে তারা।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর