আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হয়রানি করলে নারায়ণগঞ্জে অগ্নিস্ফূলিঙ্গ হবে : শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন,‘নারায়ণগঞ্জে কোন ব্যবসায়ী বা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হলে মেনে নেওয়া হবে না ’।
তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হয়ে হয়রানির শিকার হবে, ব্যবসায়ীরা ভয়ে দিন কাটাবে, গণমাধ্যমের কর্মীরা সত্য লিখতে পারবে না এমন নারায়ণগঞ্জ হতে দেয়া হবে না। ‘

শামীম ওসমান বলেন, ‘আপনারা যা দেখছেন সেটা আসল না। পর্দার আড়ালে কিছু খেলা হয়। কেউ কেউ ভুলে সে খেলায় পা দেয়। হয়তো নারায়ণগঞ্জের মেহমানরা সেই খেলায় পা দিয়েছেন। আমি কারো নাম বলব না। বাইরের লোকজনদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমার ঘরের লোকজনদের দোষ। আমাদের ভেতরেই খন্দকার মোশতাকদের অবস্থান। বাইরের মানুষের কোনো দোষ নেই।’

শনিবার বিকালে শহরের ইসদাইরে বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে ‘নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী পরিবারকে ধ্বংসের চক্রান্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ ব্যানারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক জরুরি কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।

এদিকে জরুরি কর্মিসভা হঠাৎ করেই রূপ নেয় প্রতিবাদসভায়। প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীদের আবেগঘন কথাবার্তায় বিব্রত হয়ে পড়েন আয়োজকরা। এ সময় পুরো অনুষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে বেগ পেতে হয় আয়োজকদের।

প্রতিবার বক্তব্যের মাঝেই মাইক কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে কর্মসূচি চাচ্ছিলেন কর্মীরা। হুশিয়ারি দেন দল থেকে গণপদত্যাগ করার।
কর্মীদের কণ্ঠে নিজেদের একাত্মতা প্রকাশ করে জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগরের সেক্রেটারি খোকন সাহা ও সহসভাপতি চন্দন শীল জেলা পুলিশ প্রশাসনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন।
সেই সঙ্গে তারা অচিরেই এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে কঠোর আন্দোলনসহ গণপদত্যাগের হুশিয়ারি দেন।
একপর্যায়ে অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা এমপি শামীম ওসমান দাঁড়িয়ে নেতকর্মীদের উদ্দেশে হাতজোড় করে ক্ষমা চান এবং শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
কর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে শামীম ওসমান বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান নেত্রীর কাছে জানাব। নেত্রী যেই সিদ্ধান্ত দেবেন এবং আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর কমিটির নেতারা একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনাদের জানাবেন। আর সেই কর্মসূচি সফল করে প্রমাণ করে দেবেন এই নারায়ণগঞ্জের মাটি কাদের। আর পদত্যাগ করতে হলে আমি করব।

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের নেতারা বলছেন- গণপদত্যাগ করবে। কিন্তু আমি বলি এত উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট করা যাবে না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা কী নারায়ণগঞ্জের খোঁজ রাখেন না। খোঁজ রাখেন কিনা সেটা টের পাবেন আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে। মনে রাখতে হবে সরকার আমাদের, প্রশাসন আমাদের। সুতরাং আমাদের হাত-পা অনেক সময়ে বাধা থাকে। কেউ যদি মনে করেন চাঁদাবাজি করবেন, মামলা দেবেন, হয়রানি করবেন সেটা হবে না। আমাদের সিনিয়র নেতারা বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানাবেন। আমি মনে করি, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোনো অনাচার চলবে না।’

শামীম ওসমান বলেন, ‘কয়লাতে খোঁচা দেয়ার চেষ্টা করবেন না। আগুন জ্বললে কিন্তু নেভাতে পারবেন না। আমি শামীম ওসমানও তাদের সামলাতে পারব না। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের লোকজন কিন্তু বিচ্ছু বিচ্ছু খেলতে অভ্যস্ত। আমি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি। আগ্নেয়গিরি দেখেছেন আগ্নেয়গিরির আগুন কিন্তু দেখেন নাই। নারায়ণগঞ্জে অগ্নিস্ফূলিঙ্গ হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সামছুল ইসলাম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সেক্রেটারি শওকত আলী, বন্দর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, জেলা কৃষক লীগের সেক্রেটারি ইব্রাহিম চেঙ্গিস, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল ও শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু প্রমুখ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর