টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার ও মির্জাপুর দুই উপজেলার অধীন দেলদুয়ার-পাকুল্ল্যা সড়ক যেন ডাকাতদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে দুই উপজেলার অধীনে হওয়ায় সড়কটির নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছে নানা সমস্যা । দুই উপজেলার শেষ সীমানা হওয়ায় সড়কটিতে কোন উপজেলায় সঠিকভাবে নিরাপত্তা নেই বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ধারণা করছেন। সে সুযোগে ডাকাত সদস্যরা সহজে ডাকাতি করে প্রতিনিয়তই পার পেয়ে যাচ্ছে । দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে সড়কটিতে ডাকাতি, ছিনতাই ও প্রাণহানির মত মর্মান্তিক ঘটনা । সন্ধ্যার পর থেকেই দেলদুয়ার-পাকুল্ল্যা সড়ক ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের দখলে চলে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ডাকাত কিংবা ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হচ্ছে এ সড়কে চলাচলকারীদের। ফলে রাতে সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীরা থাকেন চরম আতঙ্কে। সড়ক ব্যবহারকারীদের কাছে বর্তমানে আতঙ্কের নাম দেলদুয়ার-পাকুল্যা সড়কপথ। রাতের আঁধারে সড়কটিতে গাড়ির গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি , অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবী করে কুখ্যত ডাকাত সদস্যরা। ঢাকা বা মির্জপুর থেকে দেলদুয়ারের সহজ যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সড়কটি ব্যবহার করছে ।
স্থানীয়রা জানান, দেলদুয়ার থেকে পাকুল্ল্যা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দুরত্ব । রতœাউরি গ্রাম পার হলেই প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে কো বাড়ি ঘর নেই । ফলে দীর্ঘ ফাঁকা জায়গার সুযোগ নিচ্ছে ডাকাতরা । সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সড়কটিতে একাধিক সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ট্রাক, সিএনজি, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল থামিয়ে নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে। দেলদুয়ার-পাকুল্যা সড়কের পাকুল্যা সংলগ্ন-ব্রিজ, পাকুল্যা সংলগ্ন-রবি টাওয়ার, বাথুলি মোর, রতœাউরী নামক স্থানে ঘটে থাকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। এদিকে, সড়কটি দুই উপজেলার অধীনে হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে অনেক সময় পড়তে হয় বিলম্বনায় । এমন অবস্থায় দেলদুয়ার-পাকুল্ল্যা সড়কের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য জোর দাবী জানান ।
জানা যায়, সম্প্রতি মিজানুর রহমান নামে এক ব্রাক ম্যানেজার তার নিজ কর্মস্থল কালিয়াকৈর যাওয়ার পথে দেলদুয়ার-পাকুল্যা সড়কের রতœাউরী নামক স্থানে পৌঁছলে একদল ডাকাত মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। ব্রাক ম্যানেজার প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ডাকাতরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে একটি ডিসকভার মোটরসাইকেলসহ সঙ্গে থাকা ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দেলদুয়ার থানার ওসি একে সাইদুল হক ভূইয়া বলেন, এ সড়কটিতে নিয়মিত পুলিশের টহল চলছে। বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা এসে এ রাস্তায় অঘটন ঘটিয়ে চলে যায়। অনেক চোর-ডাকাত ও ছিনতাইকারীকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।