বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিন, আহ্বান শঙ্খ-নাসিরুদ্দিনদের

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে ভোট দিতে দেশের জনগণের প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের লেখক, কবি, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও সংস্কৃতিকর্মীরা।

১২টি আলাদা ভাষায় প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে দেশটির লেখক, কবি, চলচ্চিত্র ও মঞ্চনাটকের ছয়শরও বেশি পরিচিত মুখ ‘ধর্মান্ধতা, ঘৃণা এবং উদাসীনতাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত’ করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের কবি শঙ্খ ঘোষ, নবনীতা দেবসেনরা ‘ফ্যাসিস্ট’ বিজেপি ও তার শরিকদের বর্জনে পদযাত্রারও ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মীদের এ ‘একাট্টা অবস্থান’ ভারতের ইতিহাসে বিরল।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের তালিকায় আছেন নাসিরুদ্দিন শাহ, শঙ্খ ঘোষ, নবনীতা দেবসেন, অনুরাগ কাশ্যপ, লিলেট দুবে, রত্না পাঠক শাহ, মহেশ দত্তানি, কঙ্কনা সেনশর্মা ও অমল পালেকরের মতো জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও।

শুক্রবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, ‘একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল, যার নাম বিজেপি, তার উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সেই দল আসার পরে দেশের সার্বিক অবস্থা চূড়ান্ত অবক্ষয়ের রাস্তায়।’

বেকারত্ব, কৃষকমৃত্যু, মূল্যবৃদ্ধি এবং ধর্মীয় হানাহানি ও জাতিগত বিদ্বেষের প্রসঙ্গ টেনে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট বিজেপি ও তার সঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলোকে বর্জন করুন।’ ১২ এপ্রিল কলকাতায় মৌলালি মোড় থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত পদযাত্রারও ডাক দিয়েছেন তারা।

১২টি ভাষায় প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে তারা বলছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং সবার জন্য সরকার গড়তে বিজেপি ও তার শরিকদের বিরুদ্ধে ভোট দিন। দুর্বলতমের হাতে ক্ষমতা, সংহতি রক্ষা, পরিবেশ সুস্থ রাখা এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তার উন্মেষের জন্য ভোট দিন।’

তাদের দাবি, ‘ভারত নামের ধারণাটাই আজ বিপন্ন। আজ হাসি, গান, নাচ সবই হুমকির মুখে। আমাদের সংবিধানও বিপন্ন। যে সব প্রতিষ্ঠানে যুক্তি, তর্ক, মতামত বিনিময়ের পরিসর ছিল, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। প্রশ্ন করলে, মিথ্যের বিরুদ্ধে সরব হলে, সত্য বললে জাতীয়তাবাদ বিরোধীর তকমা দেয়া হচ্ছে।’

স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এ বারের নির্বাচনক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিহিত করে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও হিন্দুত্বের জিগির তুলে গুন্ডামিকে প্রশ্রয় দেয়া শুরু করেছে। পাঁচ বছর আগে যে ব্যক্তি জাতির রক্ষাকর্তা হিসেবে এসেছিলেন, তিনি তার নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের বেঁচে থাকা দুর্বিষহ করে তুলেছেন।’

প্রসঙ্গত, আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট পর্ব। সাত দফায় এই ভোটগ্রহণ শেষ হবে ১৯ মে। আর ফল প্রকাশ হবে ২৩ মে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর