ভোলায় সংঘর্ষে নিহতদের দাফন সম্পন্ন

ভোলার বোরহানউদ্দিনে সংঘষের ঘটনায় নিহত ৪ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজানের মরদেহ নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয়।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক জানান, দুপুরে নিহতদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এদিকে নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল। তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ৬ দফা দাবি আদায়ে সংবাদ সম্মেলন করে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে।

ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ কোনো দাবি নিয়ে আমাদের কাছে আসেনি, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে রোববার তাদের ৩টি দাবি আমরা মেনে নিয়েছি।

সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবি মেনে নেয়নি, তাই আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দাবি মানা না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

এদিকে গুলিতে নিহত মাহফুজের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা রিজিয়া বেগম।
নিহতের ভাই মিরাজ পাটোয়ারী বলেন, সমাবেশে গিয়ে গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মাহফুজ। কয়েকদিন থেকে চোখের চিকিৎসা চলছিল তার। সে হাফিজি পড়া শেষ করেছিল।

ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, কোথাও কোনো অপ্রতীকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সহযোগিতা করবেন বলেন আমাদের জানিয়েছেন।

বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, পুলিশ পুরো বিষয়ের তদন্ত করছে। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় বোরহানউদ্দিনে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে, ভোলা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য, ফেইসবুক একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সমাবেশের ডাক দেয় বোরহানউদ্দিনের তৌহিদী জনতা। ওই সমাবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়। এতে ৪ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ৩৮ জন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর