মধুমতি নদীর পানি ও ভাঙন কিছুটা কমলেও কমেনি চোখের পানি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চরনারানদিয়া গ্রামে থামছেই না মধুমতি নদীর ভাঙন।তবে গত এক সপ্তাহ আগের চেয়ে ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমেছে।নদীর পানি ও ভাঙন কিছুটা কমলেও চোখের পানি কমেনি মধুমতি নদীর ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ একাধিকবার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালিয়েও বিফল হয়েছে।এলাকাবাসীর দাবী শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন কবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এলাকাবাসীকে নিঃস্ব হওয়া থেকে বাঁচানো হোক।

ছবি- বার্তাবাজার

সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ চরনারানদিয়া এলাকায় মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বসতভিটা,ফসলি জমি ও ফলদ বৃক্ষ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী প্রায় শতাধিক পরিবার।রাক্ষুসী মধুমতির হিংস্র থাবায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সেই সব পরিবারের জীবন সংসার।সব কিছু হারিয়ে একটু মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজতে দিশেহারা হয়ে ছুটছে ক্ষতিগ্রস্ত সেই পরিবারগুলো।এখনও জমির সন্ধানে ভাঙ্গন কবলিতরা খেয়ে না খেয়ে মধুমতির পারে বসে থাকেন।
ছবি- বার্তাবাজার

নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে একা বসে চোখের পানি ফেলছিলেন দক্ষিণ চরনারানদিয়া গ্রামের বৃদ্ধা দিপালী রাজবংশী। তার কাছে গিয়ে কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমরা মাঝি মানুষ। নদীতে মাছ মাইরে আমাগে সংসার চলে।সেই কষ্টের সবকিছু নদীতে চইলে গেছে’।
ছবি- বার্তাবাজার

খরশেদ সর্দার নামের গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘এবছর নদীতে আমার বাড়ী ভেঙে গেছে।নতুন করে বাড়ী করবো সেই জমিও নেই আর সেই সামর্থ্যও নেই।বর্তমান পাশের এক বাড়ীতে থাকি।’

অপরদিকে ভাঙন থেকে বেঁচে যাওয়া নদী তীরের বাকী পরিবারগুলো প্রতিনিয়তই আতঙ্কে নিদ্রাবিহীন রাত কাটাচ্ছেন।হুমকির মুখে রয়েছে দক্ষিণ চরনারানদিয়া গ্রাম।ভাঙন রোধে খুব দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বিলীন হয়ে যেতে পারে গ্রামটি।

গ্রামের অপর এক বাসিন্দা ইকরাম মিয়া বলেন, ‘নদী ভাঙনের যন্ত্রণা কত নির্মম হতে পারে এ অঞ্চলের মানুষ তার জলন্ত উদাহরণ।’

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম. এম জালালউদ্দিন আহমেদ বার্তা বাজারকে বলেন, ‘এই এলাকায় যদি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয় তাহলে গ্রামটি রক্ষা পাবে।আশা করি সরকার এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণে দৃষ্টি দিবেন।’

এবিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) সন্তোষ কর্মকার বার্তা বাজারকে জানান “তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিম ও দক্ষিণ চর-নারানদিয়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।

সারাদেশেই নদী ভাঙন আছে, তাই দ্রুত কোনো প্রকল্প নেওয়া সম্ভব না। তবে ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা পাউবোর রয়েছে।এ ব্যাপারে হিসাব-নিকাশ করে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর