খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় : মওদুদ

আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।

তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় বলেছি, এখনও বলি, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে’

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে মিলায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া কোনও দিন প্যারোলে মুক্তি চাইবেন না দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘যারা খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথা বলেন, তারা হয় ভুল বলেন, না হয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলেন। কারণ তার মুক্তির সঙ্গে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুতরাং তার মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন রাজপথে ছাড়া অন্য পথে কোনও সফল হবে না। আমাদের একটাই পথ রাজপথ। যদি পারি তাহলে আমরা সফল হবো।’
আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘একদলীয় শাসনের রোল মডেল’ বলে মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ‘এই সরকার বলে তারা উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্রহীনতার, বিচারহীনতার, ভোটের অধিকার হরণ করার ও একদলীয় শাসনের রোল মডেল হলো বাংলাদেশ। ভোট চুরির রোল মডেল হলো এখন বাংলাদেশ।’

দেশে কোনও জবাবদিহি সরকার না থাকার কারণেই্ দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সরকারের যতটুকু মুখে বলা দরকার বলছে কিন্তু তারপর আর কিছুই করে না। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘অধিকার’-এর এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গতবছরে শিশুধর্ষণ হয়েছে ৬ হাজার ৬৬৭। এটি গবেষণার বিষয়। অপরাধীরা মনে করে অপরাধ করলে পার পেয়ে যাবে, তাই তারা অপরাধ করে যাচ্ছে।’

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, ‘প্রতিবাদ করার শক্তি মনে হয় আমরা হারিয়ে ফেলেছি। ২০১৯ সাল হয়ে গেছে বর্তমান সরকারের জন্য একটা মরণকাল। ২০১৯ সালে প্রথমে দেখুন শিশু নির্যাতনের মহোৎসব বাংলাদেশে চলেছে, এসব ঘটনার পেছনে আওয়ামী লীগ, তাদের নিজস্ব লোকজন, যুব লীগ-ছাত্রলীগের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে।’

সারাদেশে ১৪০টি টর্চার সেল আছে শুধু ছাত্রলীগের বলে উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, ‘এত দিন ধরে এসব টর্চার সেল ও ক্যাসিনো চলছে, সরকার কি জানতো না? অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে, এটা সরকার জানেন না এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। প্রশাসন জানে, পুলিশ জানে, গোয়েন্দা বিভাগের কর্মচারীরা জানেন, পলিটিশিয়ানরা জানেন, এমপিরা জানেন, মন্ত্রীরা জানেন, প্রত্যেকে এটার শেয়ার নিয়েছেন। যার জন্য তারা চুপচাপ ছিলেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন ব্যাংকক চলে গেছেন।’

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি এক কথায় বলতে পারি, গত ৪৮ বছরে এদেশে এত দুর্বল, এত জালিম সরকার আর কখনও আসেনি। মানুষ প্রতিবাদ করতে চায়। কার পেছনে প্রতিবাদ করবে? আমাদেরই জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণ আমাদের কাছে আসবে না। তাদের কাছে গেলেই তারাও আমাদের সঙ্গে আসবে। জনগণকে রাজপথে নিয়ে কর্মসূচি দেওয়া দরকার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আবরারের স্ট্যাটাস যারা দেখেছেন, ওই সময়ে খুনিরা যেসব কথা-বার্তা বলেছে, এটা স্পষ্ট যে, সে মারা গেছে দেশের পক্ষে ও ভারতের বিপক্ষে কথা বলার জন্য।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর