টাকা পাচার করে পেলেন রেমিট্যান্স পদক

কমার্স ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন। আর দেশে টাকা এনেছেন জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে। তিনি দেশের অন্যতম বড় ঋণ খেলাপি মো. শাহজাহান বাবলু। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শীর্ষ ঋণ খেলাপি। তাঁর কাছে ব্যাংকের পাওনা ১৮৪ কোটি টাকা।

জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আনায় রেমিট্যান্স পদক পেয়েছেন ওই শাহজাহান বাবলুও। বৈধ পথে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) পাঠানোয় ৩৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাঁচ ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় এ পুরস্কার।

এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীদের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউস। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এবারের আয়োজনটি ৬ষ্ঠ বারের মতো।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা।

পেশাজীবী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন ও সিকদার বাচ্চু, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আফতাব হোসেন, সুকেশ রায় ও ইশা খোশনু, জার্মান প্রবাসী মো. কামরুজ্জামান, মালয়েশিয়া প্রবাসী আহমেদ রায়হান সামসি, সিঙ্গাপুর প্রবাসী দেওয়ান মাসুদ কামার, কাতার প্রবাসী ইকবাল হোসেন ও নাইজেরিয়া প্রবাসী নওশাদ আহমেদ।

বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী মো. ইমরান হোসেন ভূঁইয়া ও সুভাষ চন্দ্র মজুমদার, ওমান প্রবাসী রফিকুল ইসলাম, কানাডা প্রবাসী মোস্তফা কামাল, কাতার প্রবাসী নির্মল কান্তি ঘোষ, কুয়েত প্রবাসী তৌহিদ আহমেদ, সোমালিয়া প্রবাসী নাসির আহমেদ ও আফগানিস্তান প্রবাসী মো. রেজাউল বারী চৌধুরী।

ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মো. অলিউর রহমান, আব্দুল করিম, মাহবুব আলম, মো. শাহজাহান বাবলু, মোহাম্মদ আবদুন নূর কাউসার, মাহবুবুল হাদী ফজলে রব, নুর মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ ইমাদ উর রহমান। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবু তাহের মো. আমানুল্লাহ ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মঞ্জুরুল আলমও ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন।

এর মধ্যে শাহজাহান বাবলু ব্যাংক খাতের আলোচিত অর্থ পাচারকারী। গত ১৮ জুলাই তাকে নিয়ে দেশের জনপ্রিয় একটি জাতীয় দৈনিকে ‘টেরাকোটা টাইলসে টাকা পাচার’ শীর্ষক এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর এ নিয়ে তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শাহজাহান বাবলুকে প্রধান আসামী করে মামলাও করে সিআইডি। তবে এর মধ্যে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পলাতক থাকায় পদক গ্রহন করতে আসেননি তিনি।

এদিকে রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ পাঁচ ব্যাংক ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী, ডাচ বাংলা ও জনতা ব্যাংক পুরস্কার পেয়েছে।

রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (এসআরএল), এনইসি মানি ট্রান্সফার লিমিটেড ও প্লাসিড এনকে করপোরেশন পুরস্কার পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অবৈধ চ্যানেলকে রুখে দিতে এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স উৎসাহিত করতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরো সুবিধা দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আমি চাই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্থ যেন বাংলাদেশে আসে। এ জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তা করা হবে। চলতি বছরে ২ হাজার কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসবে বলে আসা করেন অর্থমন্ত্রী।

-প্রথম আলো

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর