বিদেশী শক্তির কাছে সাহায্য চেয়ে তোপের মুখে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেনকে দমনের জন্য বিদেশী শক্তির কাছে সাহায্য চাওয়ার অভিযোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে যাচ্ছে মার্কিন কংগ্রেস।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিশংসন হতে পারেন ট্রাম্পের। তিনি যা করেছেন তা ব্যক্তিগত নয় বরং রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা বলে মন্তব্য করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বাইডেন। তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেনের ক্ষতি করতে গিয়ে এবার নিজেই তোপের মুখে পড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২৫ জুলাই ইউক্রেনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক ফোনালাপে দেশটিতে বাইডেনের ছেলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য চাপ দেন ট্রাম্প। এ ঘটনা সামনে আসার পরই শুরু হয় বিপত্তি। তদন্তের জন্য ট্রাম্প ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তা ত্বরান্বিত করবেন বলেও অঙ্গীকার করেছিলেন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হোয়াইট হাউজের ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে মঙ্গলবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা দেয় মার্কিন কংগ্রেস।

ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘ইউক্রেনের কাছে সাহায্য চাওয়ার কথা ট্রাম্প নিজেই স্বীকার করেছেন। কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়, এ বিষয়ে তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। কারণ এর মাধ্যমে তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেও গাফিলতি করেছেন।’

একই দিন সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে প্রতিপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেয়া শপথ ভঙ্গ এবং পুরো রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন ট্রাম্প।

জো বাইডেন বলেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়নের ইচ্ছা যেদিন প্রকাশ করেছিলাম, আমি সেদিনই বলেছি, আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিজেকে অসীম ক্ষমতার অধিকারী মনে করেন। তিনি জাতীয় স্বার্থ বোঝেন না, প্রতিটি পদক্ষেপই নেন ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য। কিন্তু ইউক্রেনের কাছে তিনি যা চেয়েছেন, তা পুরো রাষ্ট্র ও নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা। তার অবশ্যই অভিশংসন হওয়া উচিত।’

তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে আবর্জনা বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে তিনি দাবি করেন, সম্পূর্ণ নিয়মের মধ্যে থেকেই ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলাপ করেছেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘সামরিক সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি দিয়ে শুধু ইউরোপের দেশগুলোর থেকে সহায়তার হার বাড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা, বিশেষ করে ন্যান্সি পেলোসি ঘটনা বিকৃত করে বিশ্বের কাছে আমাকে অপমান করতে চাইছেন। তবে আমিও বলে দিই, তদন্ত করে কোন সুবিধাই করতে পারবেন না তারা।’

এদিকে, জাতিসংঘের ওই অধিবেশনে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোন চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। এসময় ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শুধু অর্থ সহায়তা নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিনিয়োগ, পররাষ্ট্র ইস্যুতে সমর্থনসহ সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করে কিয়েভ।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর