বৈশাখ আর চৈনিক সভ্যতার দেশে এ যেন এক উৎসবের গল্প!

পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন। এটি ১৪ এপ্রিল এবং অন্যান্য স্থানে ১৫ এপ্রিল। ছুটির দিনটি বাংলাদেশে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে উদযাপন করা হয়।

এটি আসাম, ত্রিপুরা, ঝাড়খন্ড ও উড়িষ্যার মতো অন্যান্য ভারতীয় রাজ্যের বাঙালি সম্প্রদায়গুলিতেও উদযাপন করা হয়। এবং সমগ্র ভারতবর্ষের পাশাপাশি বাঙালি সম্প্রদায়ও।

চেংদুতে সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। পর্যটন ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে গতবারের চেয়ে এবারের আয়োজনটা হতে যাচ্ছে একটু ভিন্ন আঁচের। আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগও। দেখার অপেক্ষায় এবারের জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে বৈশাখ উদযাপনের।

প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, আল্পনা, মঙ্গোল শোভাযাত্রা, হিন্না (মেহেদী), গান, পুতুলনাচ, ঐতিহ্যবাহী পোশাক সবই থাকছে রংঢঙের এ উৎসবের গল্পে। হরদমে চলছে পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) পালনের প্রস্তুতি।

উৎসবের সাতপাঁচ পরিকল্পনা নিয়ে কথা হচ্ছিল; এ গল্পের আয়োজনে থাকা পর্যটন ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্টুডেন্ট ফারজানা রিয়ার সাথে। ছাইরঙা এ শহরটা এখন শ্বেতশুভ্র রূপ ধারণ করেছে। শহরটায় এক ধরণের শূন্যতা, সবাই কেমন দলছুট। মেট্রো, পথে, শপে সবখানে মনে হয় যন্ত্র ঘুরছে!

নিজের শৈশবের স্মৃতি থেকেই এখানে প্রথম বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করেছি। এবারের আয়োজনও এরইমধ্যে চলছে। এখন অনেকটাই শেষ পর্যায়ে। নিজেদের সংস্কৃতিকে কিছুটা হলেও উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। এবারেও আয়োজনে থাকছে ভিন্ন মাত্রা। একে অন্যের উৎসবকে বজায় রাখা ও সমম্বয় করা, কিছু যৌথ বিষয়ও থাকছে নতুনত্ব হিসেবে।

অনুষ্ঠান সূচি, স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে উনি আরো জানান, সমস্ত প্রোগ্রাম সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াংইয়ান ক্যাম্পাস যুব স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর কিছুটা ছোট পরিসরে আমরা এ আয়োজন সম্পন্ন করলেও বেশ ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম।

সবার উৎসাহী অংশগ্রহন ইন্সপায়ার করেছে। এবার আয়োজন প্রত্যাশা করছি একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের সার্বিক সহযোগিতা এমন আয়োজনকে সার্থক করেছে সর্বোপরি।

এ ছাড়াও এবার আয়োজনে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে যোগ হচ্ছে; বাংলাদেশী ও চীনা ছাত্র-ছাত্রীদের যৌথ নৃত্য, র‍্যাম শো, ড্রামা। যেখানে অংশগ্রহন করছেন বাংলাদেশ, চীন, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। আয়োজকরা প্রত্যাশা করছেন এর মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতিকে কিছুটা হলেও পরিচয় করিয়ে দিতে সক্ষম হবেন।

ইন্টারন্যাশনাল অফিসের ডিন মিসেস সু মেই জানান, ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমবারের মত গতবছর এ আয়োজন শুরু করেছিল। এটা আমাদের জন্য নতুন একটি আনন্দের বিষয় ছিল। এমন কিছু আমাদের মনে রাখার মত ভাল কিছু অভিঞ্জতা ও সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিয়েছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার এ আয়োজন বড় পরিসরে করা হচ্ছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করছি। আমরা চাই এমন আয়োজন সুন্দর ও সার্থক হয়ে উঠুক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বাংলাদেশি সকল শিক্ষার্থীদের এ নিয়ে বেশ কর্মব্যস্ত দেখা গিয়েছে। কেউ কেউ আবার প্ল্যাকার্ড ও আলপনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যালেন্ডারের নববর্ষের দিনটি একই দিন। বাংলাদেশে এটি একটি জাতীয় ছুটির দিন। বৈশাখ বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস। বৈশাখী মেলা দেশের বিভিন্ন অংশে অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলাগুলিতে বিভিন্ন কৃষি পণ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, খেলনা, প্রসাধনী, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের খাবার ও মিষ্টি বিক্রি হয়। মেলা এছাড়াও গায়ক এবং নর্তকী সঙ্গে, বিনোদন প্রদান। তারা লোক সঙ্গীত উপস্থাপন করে এই মেলার অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে পুতুল নাচ একটি বিশাল অংশ দখল করে থাকে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর