লক্ষ্মীপুরে যুবকের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ধুম্রজাল

লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জের নিহত মোরশেদ আলমের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে চলছে ধুম্রজাল। নিহত হওয়ার ৮ দিনেও এখনো উদঘাটন হয়নি মৃত্যুর কারণ। ভবানীগঞ্জ কলেজ ভবনেই হত্যার ঘটনা ঘটে। পরিবারের দাবী তাকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত মোরশেদ আলম সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত সফিউল্যার ছেলে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিহত মোরশেদ। তিনি বিএনপি রাজনীতির সাথেও সম্পৃক্ত ছিল বলে জানা গেছে। তবে যুব মহিলা লীগ নেত্রী ও সাবেক ইউপি সদস্য সেলিনা, তার বোন জামাই এমরান ও গিয়াস মাষ্টারের ছেলে অভিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে বলে জানান স্থানীয় ও নিহতের পরিবার।

নিহত মোরশেদের পরিবারিক অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ১৪ ই সেপ্টেম্বর রাতে মোরশেদ তার খালার বাড়িতে ছিলো। তার বন্ধু স্থানীয় গিয়াস মাষ্টারের ছেলে অভি ঘটনার আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে খালার বাড়ি থেকে মোরশেদকে ডেকে আনে। সকাল বেলা মোরশেদের মৃত্যুর খবর পায় তারা। ওই রাতেই তাকে পিটিয়ে হাত-পা ও পাজরের হাড় ভেঙ্গে দিয়ে হত্যা করে। পরে মোরশেদকে অভিযুক্ত সেলিনার বাড়ীতে নিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মোরশেদে মরদেহ ওই বাড়ীর সামনে রেখে যায় সেলিনাসহ অন্য অভিযুক্তরা।

নিহত মোরশেদের ভাই রহমান মেম্বার বলেন তার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন রাত সাড়ে ৪ টার দিকে অভি ফোন দিয়ে তার ভাই স্টক করেছে এবং নাকে মুখে ফেনা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান। এরপর ভোর রাতে অভি পিয়ারাপুরের তার খালার বাড়ি থেকে মোরশেদের ২ টা এন্ড্রয়েড মোবাইল, তার মটরসাইকেল এবং কিছু নগদ টাকা নিয়ে আসে। তিনি দাবী করেন তার ভাইকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। থানায় মামলা নিতে চায়না বলে অভিযোগ রহমানের। তার ভাই মাদকের সাথে জড়িত ছিল বলে জানান তিনি।

ওই রাতের প্রত্যক্ষদর্শী ভবানীগঞ্জ কলেজের সাবেক নৈশ প্রহরি ইসমাইল মাঝি জানান, রাত দেড় টার দিকে ৪ বার শোরচিৎকার শুনতে পান তিনি। চিৎকার শুনে কলেজের সামে এগিয়ে আসতেই দ্বিতীয় তলা থেকে ৬ জন লোক নেমে আসতে দেখেন। এসময় মোরশেদকে দুজনে কাঁধে উঠিয়ে সেলিনার বাড়ীতে নিয়ে যায়। তবে কাউকে চিনতে না পারলেও অভিকে চিনতে পায় তিনি। এর আগে পরিষদের সামের দোকানে এক লোক টাকা ৫ হাজার রেখে যায়। ওই টাকা সেলিনার বোন জামাই এমরান ও সেলিনার ছেলে নিয়ে যেতে দেখেন নৈশ প্রহরি ইসমাইল।

অভিযোগ অস্বীকার করে সেলিনা সাংবাদিকদের জানান, মোরশেদকে তিনি চিনেনা। তিনি এ বিষয়ে কোন কথা তার নিকট জানতে না চেয়ে এমপি ও এসপির নিকট জানতে চাওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে অভিযুক্ত এমরান ও অভিকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
ভবানিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম রনি জানান, এটা একটা রহস্য জনক মৃত্যু। তিনি বলেন অপমৃত্যু এবং বিচার বিহীন মৃত্যু তার ইউনিয়নে অতিতে কখনো হয়নাই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার জনগন আতংকিত অবস্থায় আছে।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, ওইদিন ঘটনাস্থল থেকে মোরশেদের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এখনো ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পায়নি। এঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর