সম্পত্তি লিখে নিয়ে পিটিয়ে মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলো ছেলে ও বউ

সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে মাকে তাড়িয়ে দিয়েছে ছেলে নুর ইসলাম। মায়ের শেষ সম্বল ভিটে মাটিসহ প্রায় ৫০ শতাংশ জমি লিখে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলে বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের কোশাকান্দা গ্রামে। ভাগ্যাহত ওই মায়ের নাম আমেনা বেগম (৮০)। তিনি উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের কোশাকান্দা গ্রামের মৃত অাফতাব উদ্দীনের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানায়, ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মাকে মারপিট করে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে নুর ইসলাম। আগেও কয়েকবার ওই মা স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার গেলেও কেউ বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি। গত ৫ সেপ্টেম্বর নুর ইসলাম ও তার স্ত্রী পিটিয়ে আহত করে বাড়ি থেকে বাহির করে দিলে খবর পেয়ে ভাইঝি উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।

টাকার অভাবে ছেলের মারপিটে আহত হওয়ার চিকিৎসাও করাতে পারেননি। ছেলে বউয়ের আঘাতে মুখে কালো রং ধারণ করেছে।

সেই মা বলেন, বিয়ের পর ১ ছেলে ২ মেয়ের জন্ম হওয়ার কয়েক বছর পরই মারা যায় তার স্বামী। স্বামী শেষ সম্পত্তিটুকু আগলে অনেক কষ্টে ছেলে মেয়েদের লালন-পালন করেন তিনি। পরে একে একে ছেলে মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু বিয়ের পর ছেলে তার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। কয়েক বছর আগে স্বামীর শেষ সম্বলটুকুও জোর করে লিখে নিয়েছে নুর ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, ছেলে জমি লিখে নেয় আমাকে নতুন করে ঘর করে দিয়ে দেখাশুনা করবে এমন শর্তে। কিন্তু জমি লিখে দেওয়ার পর আমার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। আমি বাড়ি থেকে বের হতে না চাইলে মারপিট করে মুখ ফাটিয়ে দেয় নুর ও তার স্ত্রী। ১৪ দিনে একবার আমাকে দেখতে আসেনি। গতকাল সন্ধায় চেয়ারম্যান কে নিয়ে এসেছিল আমাকে নিতে আমি এখন আর বাড়িতে যাবনা যদি সঠিক বিচার না হয়। আমি গেলে আবার ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য এরশাদ উদ্দিনের মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর হামিদ টিটু মোবাইল ফোনে বলেন, এই বিষয়ে আমি আগে কিছুই জানতাম না, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১ টায় ছেলে নুর ইসলাম আমাকে অবগত করেন এবং সন্ধায় হাসপাতালে গিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি আমেনা বেগম আমাকে অাংশিক ঘটনা বলেন। ছেলে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চান। যদি ছেলে মেয়েরা মায়ের বরণ পোষন না করতে চায় তাহলে আমি ঢাকা থেকে এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা নিব।

তবে মোবাইল ফোনে ওই ছেলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, কোন লিখিত অভিযোগ না পেয়েও বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে আমেনা বেগমের খুঁজ খবর নিচ্ছে। পাশাপাশি তার মেয়ের সাথে কথা হয়েছে এবং ছেলেকে খুজতে পুলিশ বাড়িতে কয়েক বার গিয়েছে পায়নি। আশা করি দ্রুত সময়ে সমস্যার সমাধান হবে। ছেলে মেয়েরা মাকে নিতে না চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সঙ্গে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নির্যাতিত মাকে সহযোগিতা করা হবে।

বার্তা বাজার/এসআর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর