পরকীয়ার জেরে শিক্ষিকার আত্মহত্যার চেষ্টা

নওগাঁ প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) কাম্পাসের ভিতরে ১স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নওগাঁ শহরস্থ মুক্তির মোড়ে প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে তৃতীয় তলায় অনামিকা মন্ডল নামে এক সহকারী শিক্ষিকা এ ঘটনা ঘটায়।সে নওগাঁ সদর উপজেলার হালঘোষপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে কর্মরত আছে।

প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে অনামিকা মন্ডল প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) ক্যাম্পাসের মধ্যে দীর্ঘক্ষন ঘোরাফেরা করছিল। এর এক সময় সে ইনষ্টিটিউটের তৃতীয় তলার বাথরুমে ঢুকে পড়ে। বাথরুমে দীর্ঘক্ষন অবস্থান করায় পিটিআইএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্দেহ হলে তারা বাথরুমের কাছে গিয়ে তাকে দরজা খুলতে বললে বাথরুমের ভিতর থেকে কোনো শব্দ না পেয়ে তারা বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে তাকে কিছুটা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে।

পরে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে ছেড়ে দেয় ।
জানা যায় অনামিকা মন্ডল ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে নওগাঁ পিটিআই প্রশিক্ষনার্থী ছিলেন। একই ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এর সাথে ট্রেনিং অবস্থায় অনামিকার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় উভয়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরকিয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে বেশ কিছুদিন পরে হঠাৎ অনামিকা তার ব্যক্তিগত ই-মেইল থেকে গত ২৯জুন সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবিক নিপীড়ন ও প্রশাসনিক হয়রানির অভিযোগে সুপারেনটেনডেন্ট বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগটি সুপারেনটেনডেন্ট এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি উভয়কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন পরবর্তীতে অনামিকা পিটিআই প্রশিক্ষক সালাউদ্দিন কর্তৃক মানসিক নিপীড়ন ও প্রশাসনিক হয়রানি হয়নি মর্মে গত ২৩ জুলাই সুপারেনটেনডেন্ট বরাবর একটি অভিযোগ নিষ্পত্তি দাখিল করেন। আরো জানা যায়,, অনামিকা অভিযোগনামা ও নিষ্পত্তি দাখিল করলেও ভিতরে ভিতরে তাদের দু’জনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সম্পর্ক চলমান থাকে। এ ঘটনায় উভয়ের বিরুদ্ধে পিটিআই সুপারেনটেনডেন্ট প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধু মাত্র লম্পট সালাউদ্দিনকে অন্যত্র বদলীর সুপারিশ করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। উল্লেখ্য এবিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ ও প্রকাশ হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতকরে পিটিআইএর ইন্সট্রাক্টর মোজাম্মেল হক বলেন, এখানে লুকানোর কিছু নেই পুরো ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতায়। সুতরাং পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আছে।

সংবাদ পেয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় পিটিআই ক্যাম্পাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় কম্পিউটার প্রশিক্ষক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এর সঙ্গে কথা বললে সে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডল ঘটনা স্থল ত্যাগ করার পর আত্মগোপন করায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নওগাঁ পিটিআইএর সুপারেনটেডেন্ট রবিন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, গত জুন মাসে শিক্ষিকা অনামিকা মন্ডল প্রশিক্ষক সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন আবার জুলাই মাসে তিনি লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন যে তারা আপোষ করেছেন। অনামিকা প্রশিক্ষন শেষ করে অনেক দিন আগেই এখান থেকে চলে গেছেন। হঠাৎ করে তিনি কোনো ক্যাম্পাসে আসলেন বুঝলাম না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরদিকে এ ঘটনায় সচেতন মহলে নিন্দার ঝড় বইছে এবং ইনস্টিটিউটের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী (পিটিআই) ইনস্টিটিউট থেকে চলে যাওয়ার আশংকা করছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর