আসামির ইয়াবা নিয়ে ভাগবাটোয়ারা, গ্রেফতার ৫ পুলিশ

আসামির কাছ থেকে ইয়াবা পেয়ে ছেড়ে দেয়ার পর বাথরুমে ভাগবাটোয়ারা করার সময় পুলিশের গুলশান থানার এক এএসআই ও এপিবিএনের চার পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করে উত্তরা পূর্ব থানা ও এপিবিএন।

এদিকে সোমবার পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (পরিদর্শক) পরিদশ চন্দ্র। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া তিনজনের তিনদিন ও দুই জনের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনদিনের রিমান্ডকৃতরা হলেন- গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী (৪৪), এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল (২৩) ও নায়েক মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৭)। এ ছাড়া দুইদিনের রিমান্ডকৃতরা হলেন- এপিবিএনের কনস্টেবল মো. রনি মোল্ল্যা (২১) ও কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলাম (২৩)।

এরআগে রোববার বিকালে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর এদিন রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। অভিযানে অংশ নেয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও মামলার বাদী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-১ এর এসআই জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল (২৩), নায়েক মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৭), কনস্টেবল মো. রনি মোল্ল্যা (২১), কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলাম (২৩) ও গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী (৪৪)।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দফতরের ব্যারাক ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়াবার ভাগবাটোয়ারা করছেন। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তখনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সে বাথরুমে।

অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর। অভিযানে বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, কনস্টেবল রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পান তারা। তাদের বিস্তারিত পরিচয় নেয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে। তার পরনে থাকা ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযান চালানো হয় মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে আরও ৩৯৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শরিফুলের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়।

এবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শরীফুলকে। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, সে রনি মোল্ল্যার কাছ থেকে ১৮৫০০ টাকায় ১৫০ পিস ইয়াবা কিনেছে। এরপর গ্রেফতার করা হয় রনিকে।

সর্বশেষ প্রশান্তকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার সঙ্গে থাকা ২০০ পিস ইয়াবা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখে। বাকি ১৫০ পিস নেয় জাহাঙ্গীর আলম।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর