সৌদি’র মদিনায় বাংলাদেশিদের গণগ্রেপ্তার, ছাড় পাচ্ছেন না আকামা থাকা সত্ত্বেও

সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মদিনায় মার্কেট ঘেরাও করে বাংলাদেশিদের গণগ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। গত শুক্রবার সকালে মদিনা মসজিদুল হারামের ১৮ নম্বর গেটের সামনে অবস্থিত ‘তাইয়্যিবা কমার্শিয়াল সেন্টারে’ এই গণগ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হয়।

পুলিশের এই গ্রেপ্তারে পবিত্র হারাম শরীফে ফজরের নামাজ পড়তে যাওয়া প্রবাসীরাও বাদ পড়েননি। ওয়ার্ক পারমিট (আকামা) থাকা সত্ত্বেও ছাড় দেয়া হয়নি কাউকে। এমনকি কোনো কপিলের আবেদনও পাত্তা দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গ্রেপ্তার হওয়া এসব বাংলাদেশিরা বর্তমান মদিনার কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত চারদিন ধরে এক পোষাকেই কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন তারা। এতে করে তাদের স্বজন ও প্রবাসী ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন।

কমার্শিয়াল সেন্টারে ২০ বছরের অধিক সময় ধরে দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন নোয়াখালীর শাহ আলম। গণগ্রেপ্তার থেকে তিনি ও বাদ যাননি। কোনো অভিযোগ না থাকার পরও তিনি এখন কারাবন্দি।

তাইয়্যিবা কমার্শিয়াল সেন্টারের আলসাফা আবায়া নামক দোকানের মালিক কক্সবাজারের মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। তিনি জানান, আকামাসহ সমস্ত বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি প্রবাসীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে সৌদি পুলিশ। পুরো মদিনা নগরী জুড়ে এখন চলছে গণগ্রেপ্তার আতঙ্ক। গণগ্রেপ্তারের ভয়ে প্রবাসীরা বাসা থেকে বের হতে পারছেন না।

তিনি জানান, আকস্মিকভাবে তাদের মার্কেট ঘিরে অন্তত ৭০ জনকে আটক করা হয়। সেখানে তার ছোট ভাই এরশাদুল হক, তকির ওসমানী, দোকানের কর্মচারী নুরুল আবছারও রয়েছে। যাদের সবারই ওয়ার্ক পারমিট আপ-টু-ডেট আছে। প্রবাসে আদৌ থাকা যাবে কি-না? তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।

মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সবেমাত্র দেশের জায়গা জমি বিক্রি করে বিদেশে এসেছে এমন লোকও রয়েছেন। অনেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পবিত্র হারাম শরীফে ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে আটক হয়ে এখন জেলে বন্দি। হজ করতে আসা স্বজনদের সঙ্গে শেষবারের মতো কেনাকাটা করতে গিয়ে রেহাই পায়নি পুলিশের হাত থেকে। সবার ঠিকানা এখন মদিনার কারাগার। যেকোনো সময় তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারে সৌদি সরকার।

প্রবাসীরা জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সংবাদ শুনে তাদের কপিলরা(স্পন্সর) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের জিম্মায় অন্তত পাঁচ দিনের জামিন চেয়েছে। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ কোনো আবেদন শুনেনি। কারাগারে কারো সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি তাদের।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর