মৌমাছির কবলে তথ্যমন্ত্রীর বিমান!

সব কিছু ঠিকঠাক। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশে উড়াল দেবে বিমান। তবে বাধ সাধল মৌমাছি। হঠাৎ মৌমাছির চাক চারদিক থেকে ঘিরে ধরে বিমানটিকে। একদম ককপিটের সামনে জটলা বসায় তারা। ওই অবস্থায় উড্ডয়ন করলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারত। ইঞ্জিনে কোনোভাবে মৌমাছি ঢুকে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারত ইঞ্জিন।

শেষমেশ দমকল বাহিনীর প্রচেষ্টায় তাড়ানো হয় মৌমাছি। ফলে এক ঘণ্টারও পরে ছাড়ে বিমানটি। রোববার সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের কলকাতা বিমানবন্দরে। আর ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

মৌমাছির জ্বালায় বিমান ছাড়তে দেরি হয়ে গেল এক ঘণ্টারও বেশি। ককপিটের সামনের কাচে জাঁকিয়ে বসেছিল মৌমাছির দল। প্রচণ্ড গতিতে থাকা বিমানের ভারতের বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩৬ জন যাত্রী নিয়ে এদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির আগরতলা যাওয়ার কথা ছিল। ওই বিমানে সফরসঙ্গীদের নিয়ে আগরতলা যাচ্ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

প্রথমে ছাড়ার পরে বিমানটি সামনের দিকে একটু এগিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। পরে জানা যায়, সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ওই অবস্থায় ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে তা সারানোর কাজ শুরু হয়।

তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন মোফাখখারুল ইকবাল। তিনি বলেন, একটু পরে বিমানটি আবার গড়াতে শুরু করে। আমরা ভাবলাম এবার উড়বে। কিন্তু, একটু দূরে গিয়ে বিমান আবার দাঁড়িয়ে যায়। আবার বলা হয়, যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে।

এবারও ফের সারানোর কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে বিমান সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চান মন্ত্রী। পরে মন্ত্রীর বার্তা পেয়ে ওই সংস্থার এক কর্মকর্তা বিমানে আসেন। তিনি জানান, তাদের হাতে অতিরিক্ত বিমান নেই। তিনি নেমে গেলে আবার বিমানের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়।

মোফাখখারুল আরও বলেন, এতক্ষণ যে বিমানে বসেছিলাম, আমাদের এক কাপ চা পর্যন্ত দেয়া হয়নি।’কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর মন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা অন্য বিমানে আগরতলা যেতে চান। সে সময়ে বিমানের দরজা বন্ধ ছিল। তখন দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে মৌমাছির চাক উড়ে বেড়াচ্ছে। দরজা খুললে মৌমাছি বিমানের ভেতরে ঢুকে পড়লে বিপদ হতে পারত বলে জানানো হয় বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে।

বিমান সংস্থার এক কর্মী বলেন, যাত্রী ভর্তি বিমানে মৌমাছি ঢুকে কাউকে কামড়ে দিতে পারত। তাছাড়া বিমানের ভেতরে ঢুকে পড়া মৌমাছিদের মারতেও সমস্যা হতে। সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কীটনাশক ছড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হতো এবং যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হতো। এমতাবস্থায় বিমানবালারা মন্ত্রীকে জানান, ওই অবস্থায় বিমানের দরজা খোলা সম্ভব নয়।

খানিকটা নিরুপায় হয়ে মন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা বিমানেই অপেক্ষা করতে থাকেন। শেষমেশ এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে খবর পেয়ে বিমানবন্দরের দমকলবাহিনী এসে পানি ছিটানো শুরু করে। ১২টা ৪৫ পর্যন্ত চলে মৌমাছি তাড়ানোর কাজ। ১২টা ৫০ মিনিটে বিমানটি অবশেষে যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যায়।

বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, বিমানের সিঁড়ির নিচে, এরোব্রিজের তলায় মৌমাছির দল চাক বেঁধে থাকে। যখন বিষয়টি নজরে আসে, তখন বিমানবন্দরের ‘পেস্ট কন্ট্রোল’ ইউনিটকে ডাকা হয়। তাদের কর্মীরা ওষুধ দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে দেন। কিন্তু মৌমাছির দল এত উঁচুতে বিমানের ককপিটের বাইরে দল ধরে থাকায় বাধ্য হয়ে ডাকতে হয় দমকলকে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর