৩০ বছর ধরে শিকল বন্দি পাকুন্দিয়ার বৃদ্ধ রতন মিয়া

২৫ বছর বয়সের যুবক। বাড়ির পাশে গরু চড়ানো নিয়ে তর্ক হলে গরুর রশির খুটি দিয়ে মাথার শিরায় আঘাত করিলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় কয়েক বছর পর প্রেমিকার ঠিক হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামের প্রবাসীর সাথে। বিয়ে ঠিক হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে রতন মিয়া।

 

প্রাথমিক চিকিৎসা করা হলে কিছুদিন সুস্থ থাকার পর আবার আগের মতো অসুস্থ হয়। তার বয়স বর্তমানে প্রায় ৫৫ বছর। প্রায় ৩০ বছর ধরে পায়ে শিকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে বারান্দার খুঁটির সাথে। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার দক্ষিণ সাঠিয়াদী গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত আ : করিমের ছেলে রতন মিয়াকে। সেখানে তার বাড়িতে শিকল বন্দী জীবন পাড় করছেন।

 

তার বড়ভাই আঙ্গুর মিয়া জানান, আনুমানিক ৩০/৩৫ বছর আগে পাশের বাড়ির হজরত আলীর সাথে গরু চড়ানো নিয়ে তর্ক হলে গরুর রশির খুটি দিয়ে মাথার শিরায় আঘাত করিলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এর কয়েক বছর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তার বলেছিল সে কোনদিন ভাল হবেনা।

 

মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে এলাকাবাসীর বিভিন্ন ক্ষতি করে থাকে। কারো গরু, ছাগলকে মারধর, মানুষকে মারধর, অনেকের আবাদী সবজি-ক্ষেত নষ্ট করে। এমনকি নিজের পরিবারের লোকজনদের কাছে পেলে আঘাত করার চেষ্টা করে। মায়ের মুত্যুর সময় এলাকাবাসির অনুরোধে শিকল খুলে দিলে আমাকেই আঘাত করে সে। এজন্যই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে। ঘরের ভিতর খাবার দাবার টয়লেটের ব্যাবস্তা করে দিয়েছি। বাড়ির সকলেই খুব যত্ন করেন রতন কে।

 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চাওলার একটি পাকা ঘরের বারান্দায় শিকল পাঁয়ে মাটিতে বসে আছে রতন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে রতন তৃতীয়। কথা বুঝে কিন্তু বলতে চায়নি রতন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসি জানান পুলেরঘাট বাজার থেকে কবুতর এনে পাকুন্দিয়া বাজারে বিক্রি করিতেন রতন। ব্যবসাও ভালো চলছিলো।

ময়নার (ছদ্মনাম) সাথে প্রেম করিলে ভাল চোখে দেখনি পরিবার। ছোটভাই মারা যাওয়ায় মেঝোভাইকে পাগল বানিয়ে সকল সম্পত্তি অাত্বসাৎ করার জন্য তাকে পাগল বানিয়ে রেখেছে বড় ভাই ও তার সন্তানরা। অতিদ্রুত তাকে মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়া উচিত।

 

এ প্রসঙ্গে পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাউদ্দিন বলেন, এটা বিষয়টা আমার জানানেই। খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে মাত্র অবগত হয়েছি । আমরা তদন্ত করে দেখবো । এবং তদন্ত সাপেক্ষে খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/এমকে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর