গভীর রাতে এইচএসসি পরীক্ষার্থী যুবতীর ঘরে খলিল!

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এত দিন মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল এক বখাটে যুবক। হুমকি দিয়েছিল তাকে পরীক্ষা দিতে দেবে না। শেষ পর্যন্ত বসতঘরে সিঁধ কেটে পরীক্ষার প্রবেশপত্র চুরি করে নষ্ট করে ফেলেছে ওই বখাটে যুবক। গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মেয়েটি স্থানীয় আছিম শাহাবুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। অভিযুক্ত বখাটে যুবক হলো উপজেলার তিতারচালা গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে খলিলুর রহমান।

ঘটনাটি জানার পর গতকাল শনিবার (৩০ মার্চ) খলিলের বিচারের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। শিক্ষার্থীরা তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে ধরে নিয়ে আসে। কলেজ ও উপজেলা প্রশাসন বলছে, মেয়েটির পরীক্ষা দিতে সমস্যা হবে না।

জানা গেছে, মেয়েটি কলেজের মেধাতালিকায় সেরা ১০ জনের মধ্যে রয়েছে। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে সে। মেয়েটি আগামীকাল সোমবার (১ এপ্রিল) এইচএসসি পরীক্ষায় বসছে।

বৃহস্পতিবার মেয়েটি প্রবেশপত্র নিয়ে কলেজ থেকে ফেরার পথে মাদকাসক্ত খলিল হুমকি দেয় যে সে তাকে পরীক্ষা দিতে দেবে না।

পরে ওই দিন রাত ৩টার দিকে সিঁধ কেটে মেয়েটির বসতঘরে ঢোকে খলিল। মেয়েটি তাকে দেখে চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়। এরপর থেকেই মেয়েটির পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাওয়া যাচ্ছে না।

গত শুক্রবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন খলিলকে পাশের ভবানীপুর ইউনিয়নের কান্দানিয়া বাজার থেকে আটক করে। তাকে মেয়েটির বাড়িতে আটকে রেখে রাতভর প্রবেশপত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালায় এলাকার লোকজন। একপর্যায়ে খলিল জানায়, সে প্রবেশপত্র চুরি করে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটির ৯ মাস বয়সে তার বাবা মারা যান। বড় ভাই সংসারের হাল ধরেছেন। মা ও ভাইয়ের স্বপ্ন মেয়েটি পড়ালেখা করে সংসারের হাল ধরবে।

মেয়েটি জানায়, ‘সাত-আট মাস ধরে কলেজে যাওয়া-আসার পথে খলিল তাকে উত্ত্যক্ত ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে।’

মেয়েটির মা বলেন, ‘রাস্তাঘাটে, বাড়িতে আমার মেয়ে শান্তিতে থাকতে পারত না। রাতে পড়তে পারে না অর (বখাটের) অত্যাচারে। একজন মা হয়ে সব নীরবে সহ্য করেছি, যাতে মেয়েটির বড় ধরনের কোন ক্ষতি না হয়। শেষ পর্যন্ত ক্ষতি করেই ছাড়ল। এখন সবার সামনে হুমকি দিচ্ছে, ছাড়া পেয়ে ছেলে-মেয়েসহ আমাকে খুন করবে সে।’

আছিম শাহাবুদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘মেয়েটির পরীক্ষা দিতে সমস্যা হবে না।’

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লীরা তরফদার বলেন, মেয়েটির সঙ্গে কথা হয়েছে, পরীক্ষা দিতে তাঁর কোন সমস্যা হবে না।

ফুলবাড়িয়া থানার ওসি শেখ কবিরুল ইসলাম জানান, প্রবেশপত্র চুরির দায়ে মামলা হয়েছে। বখাটে পুলিশ হেফাজতে আছেন বলেও জানান তিনি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর