৩০ মার্চ সন্ধায় ব্রেইন টিউমারের সফল অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল। তার বায়োপসি রিপোর্টও পজিটিভ। তাই বলে এখনও আশঙ্কামুক্ত নন তিনি। এমনটাই জানালেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী চৈতী ফারহানা।
তবে তিনি মহান স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আদায় করে বলেন, ও আশঙ্কামুক্ত কি-না, এখনও বলার সময় হয়নি। তবে সিঙ্গাপুরে যেতে আরেকটু দেরি করলে বিরাট সর্বনাশ হয়ে যেত।
তিনি জানান, গত বিপিএল থেকে মস্তিষ্কে বেশ কিছু সমস্যা অনুভব করছিলেন তিনি। কেন এমন মাথা ব্যথা সে বিষয়ে জানতে ৩-৪ মাস দেশের বেশ কয়েকজনের চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হন।
অবশেষে ৭ মার্চ জানতে পারেন যে, তার মস্তিষ্কে টিউমার হয়েছে।
বিষয়টি উল্লেখ করে চৈতী জানান, ‘ আমাদের সৌভাগ্য যে ১২ দিনের মধ্যে অস্ত্রোপচার করাতে পেরেছি। আর দু-তিন দিন দেরি হয়ে গেলে এই টিউমার ক্যানসারে রুপ নিত।
এসব বিষয় মোশাররফ রুবেলের বায়োপসি থেকেই জেনেছেন বলে জানান তিনি।
একটু ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গিয়ে জানলাম মোশাররফের টিউমারটা খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে। এসময় টিউমারটি লো গ্রেডে আছে। অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে নিতে ১৯ তারিখ চলে এলো। এই ১২ দিনে টিউমারটা গ্রেড এক থেকে গ্রেড তিনে চলে গেছে!
অর্থাৎ আরেকটু দেরি হলেই বড় সর্বনাশ হয়ে যেত! গ্রেড ৪ হওয়া মানে ক্যানসারে রূপ নেয়া। সে হিসেবে ভাগ্য আমাদের কতটুকু সহায় হয়েছে তা ভাষাহীন।’ মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল কাল দেশে ফিরেছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৯ মার্চ তাঁর মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার হলেও এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন।
মোশাররফ এখন ভালো আছেন জানিয়ে চৈতী বলেন, ‘এখন বেশ ভালো আছেন। হাঁটাচলা করতে পারছে ও। কিন্তু এখনও কথা বললে জড়িয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা তো শুরু হলো কেবল।এখন টিউমারের স্থলকে জীবাণু মুক্তকরণের মিশন চলবে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই। আবারও সিঙ্গাপুর যেতে হবে। চলবে নিয়মিত রেডিও আর কেমোথেরাপি। আর থেরাপি বন্ধ করে দিলে টিউমার আবার ফিরে আসার আশঙ্কা আছে। রেডিওথেরাপি আর কেমোথেরাপির মধ্য দিয়ে যেতে যেতে একদিন টিউমারের খারপ কোষগুলো সব মরে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
আগামী ১৬ এপ্রিল থেকে কেমোথেরাপি দিতে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেবেন মোশাররফ।
এভাবে কতদিন প্রশ্নে চৈতী বলেন, এভাবে ছয় মাস চলবে। তবে অস্ত্রোপচারেই ৩৫ লাখ টাকা শেষ। অত্যাধুনিক ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল থেরাপিসহ খরচ হয়ে যাবে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা।
জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৫টি ওয়ানডে খেলেছেন মোশাররফ। তার নামের পাশে রয়েছে ৪ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ২৪ রানে ৩ উইকেট। ২০০৮ সালের ৯ মার্চ চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। আর ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে খেলেন তিনি।
তবে রুবেল সেই ২০০০-০১ থেকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে আসছেন। সবশেষ বিপিএলে একটি ম্যাচ খেলা ৩৭ বছর বয়সী বোলার ১১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন।