প্রিয় স্বামীকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর আবেগঘন স্মৃতিচারণ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির স্বামী ব্যারিস্টার ড. তৌফিক নেওয়াজ অসুস্থ। তিনি এখন দিল্লীর একটি হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

স্বামীর অসুস্থতায় স্ত্রী স্বভাবতই সর্বক্ষণ তার পাশে থাকার চেষ্টা করবে। এটাই তো নারীর আসল স্বরূপ। কিন্তু এরকম কোনো নারীর কাঁধেই যদি আবার থাকে দেশ, সরকার বা মন্ত্রণালয় সামলানোর অনেকখানি গুরুদায়িত্ব, তাকে তো চাপটা অনেক বেশিই নিতে হয়। আর সেই দায়িত্বটাই নিরবে-ঠান্ডা মাথায় পালন করে যাচ্ছেন দীপু মনি।

দীপুমনিকে এখন রীতিমতো ঢাকা দিল্লী ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। ছোটাছুটির ফাকেই প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে সান্তনা দিচ্ছেন সাহস যোগাচ্ছেন। ব্যারিস্টার তৌফিক নেওয়াজের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিচ্ছেন। স্বামীর এই মৃত্যুর সন্দিক্ষণে দীপুমনি বিপর্যস্ত হলেও কঠিনভাবে হাল ধরছেন মন্ত্রণালয়ের।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক দলের কর্মকাণ্ডে থাকছেন নিয়মিত। বিভিন্ন নেতারা তার কাছে বিভিন্ন সময়ে তৌফিক নেওয়াজের খবর জানতে চাচ্ছেন। এ সময় উঠে আসছে নানা স্মৃতি নানা আলাপচারিতা। এমন একটি স্মৃতি আবেগপীড়িত করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।

ব্যারিস্টার তৌফিক নেওয়াজকে দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী

স্মৃতিচারণটি এরকম, দীপুমনি জানাচ্ছিলেন যে, তার সংসার জীবনে তিলতিল করে টাকা জমিয়ে একটা পর্যায়ে বড় অঙ্কের টাকা জমে যায়। টাকার অংকটা এমন ছিল যে, সেই সময় ইস্কাটন- মগবাজার এলাকায় একটা ফ্ল্যাট কেনা যায়। দীপুমনির কাছে ঠিক সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিংস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক হেলথে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তির সুযোগের চিঠিটি এলো। দীপুমনি তার স্বামীর পরামর্শ নিলেন।

সে সময় দীপুমনি দ্বিধান্বিত যে তিনি কি করবেন? যে জমানো টাকা আছে যদি জন হপকিংসে পড়াশুনার জন্য যান তাহলে তা খরচ করতে হবে। হবে না পছন্দের ফ্ল্যাটটি কেনা। দ্বিধান্বিত দীপুমনি এই সময় তিনি স্বামীর স্বরণাপন্ন হলেন। স্বামী তাকে বললেন, জীবনে বেঁচে থাকলে ফ্ল্যাট কেনা যাবে। কিন্তু এরকম সুযোগ জীবনে আসবে না। তিনি তখন তাকে বললো যে তুমি চোখ বন্ধ করে জন হপকিংসে পড়াশুনার জন্য যাও। সেখানে দীপুমনি পাবলিক হেলথের উপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। যেটা তার ক্যারিয়ারের একটা মাইলফলক।

প্রসঙ্গত, দীপুমনি একাধারে চিকিৎসক এবং দক্ষ আইনজীবীও বটে। দীপুমনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেদিন বিদ্যাঅনুরাগী এই মানুষটি যদি তাকে উৎসাহ না দিতেন তাহলে হয়তো তার জন হপকিংসে গিয়ে উচ্চ শিক্ষাটা গ্রহণ করা হতো না। তৌফিক নেওয়াজ ছিলেন এরকমই বিদ্যানুরাগী। সারাজীবনই তিনি দীপুমনিকে উৎসাহিত করেছেন আদর্শবান রাজনীতিবিদ হতে এবং বিদ্যানুরাগী হতে। সেইজন্যই দীপুমনি হয়তো আজকে একজন পরিণত মানুষ হয়েছেন এবং একজন সফল রাজনীতিবিদ এবং সফল মন্ত্রী হয়েছেন।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর