আসাম ইস্যু, সিলেট সীমান্তে উৎকণ্ঠা

‘আসামো কিতা অর (আসামে কী হচ্ছে), জানি না। গ্রামোর মাইনষে (মানুষ) নানা কথা কইরা (বলছে)। ইন্ডিয়ার বিষয় লইয়া আমরা কুছতা মাততাম (কিছু বলতে) চাই না। তার ফরেও (পরেও) চিন্তা অয় (হয়)। চিটাগাং যেলা (যেভাবে) রোহিঙ্গা হকলে (সব) দখল করি বইছে (বসছে), ইলা কুন্তা অইলে (সে রকম হলে) আমরার জকিগঞ্জর মানুষও বিপদো (বিপদে) পড়ি যাইব।’ এমন আশঙ্কা মনে থাকলেও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর ভরসা আছে শ্রমজীবী আব্দুল মন্নানের। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী বড় ছালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মন্নানের মতো প্রায় সবার মধ্যেই নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে।

সীমান্তের ওপারে ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিক নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকা (এনআরসি) প্রকাশের পর ১৯ লাখের ওপর মানুষ রাষ্ট্রহীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। তাদের বাংলাদেশে ‘পুশইন’ করার হুমকি দিচ্ছেন সেখানকার কিছু রাজনীতিবিদ। এমন পরিস্থিতিতে সিলেট সীমান্তজুড়ে বিজিবি ও পুলিশের সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। এতে এখানকার মানুষ কিছুটা আশ্বস্ত হলেও দুই বছর আগে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সমস্যা তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

জকিগঞ্জ, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলা মিলে ভারতের আসামের সঙ্গে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৫৪ কিলোমিটার সীমান্ত থাকায় জকিগঞ্জের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেশি। এ উপজেলার সীমান্তবর্তী বীরশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, ‘আসামের এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সে দেশের সরকারকেই এর সমাধান করতে হবে। তারপরও সীমান্তের মানুষের মধ্যে নানা উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।’

কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী অঞ্চল বড়গ্রামের বাসিন্দা ও সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য আলমাছ উদ্দিন বলেন, যে কোনো দেশের মানুষ তার নাগরিকত্ব নিয়ে বিপাকে পড়াটা খুবই দুঃখজনক। আসামের ১৯ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব জটিলতার বিষয়টি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরাও উদ্বিগ্ন। আশা করি ভারত সরকার দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করবে।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর