যৌতুকের জন্য স্ত্রীর শরীর ঝলসে দিলো স্বামী

মেয়ে শিক্ষিত হওয়ায় কোনো যৌতুক প্রয়োজন নেই বলে পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতায় আছিয়া আক্তার নূপুরের (২০) বিয়ে হয় একই এলাকার আলাউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ইয়াছিন চৌধুরীর (২৭) সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী ইয়াছিন।

পরে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকাও এনে দেয় আছিয়া। বিয়ের দেড় বছর না যেতেই আবারও স্বামী ইয়াছিন দোকান ও বাড়ির কাজ করানোর কথা বলে স্ত্রী আছিয়াকে বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে মানষিক চাপ সৃষ্টি এবং শারীরিক নির্যাতন করে।

একই সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়িও মানসিকভাবে প্রহার করে আছিয়ার ওপর ৩/৪ দিন পর পর নির্যাতন চলতে থাকে জানিয়ে আছিয়া আক্তার নূপুর বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুরু হয় তার ওপর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্বামীর মানষিক প্রহার। এক পর্যায়ে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায় স্বামী ইয়াছিন। রাত ১টার দিকে আবারও ঘরে এসে তাকে মারধর করে স্বামী। রাত আনুমানিক ৩টায় আছিয়াকে রুমে রেখেই ঘরে আগুন জালিয়ে দেয় ইয়াছিন।

জানালার পর্দায় আগুন ধরে গেলে সেই আগুন আছিয়ার গায়ে এসে পড়ে। তার বাম হাত ঝলসে যায় এবং মাথার চুলও পুড়ে যায়। আছিয়ার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে বলে জানায় আছিয়া। নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভুক্তভোগী আছিয়া আক্তারের মা বলেন, যৌতুকের জন্য ৩/৪ দিন পরপরই আমার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ইয়াছিন। মেয়ের সংসারের কথা ভেবেই এর আগে ১ লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করি ইয়াছিনকে। তারপরও সে আরো যৌতুক দাবি করে আসছে এবং আমার মেয়েকে অমানসিক নির্যাতন করে। আমরা এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ চাই।

আছিয়া আক্তার নূপুর বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের সহায়তা নিলে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে ইয়াছিন। তাছাড়া একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য তারা আমাকে জোর-জবরদস্তির চেষ্টা করে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সোমবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

বার্তাবাজার/এম.কে