সাতক্ষীরায় ২৫০ কি:মি: বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-১ ও ২ এর আওতাধিন ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ন। সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ ব্যাপক ভাঙ্গন ও ফাঁটল দেখা দিয়েছে।

নদী ভাঙ্গনে তীব্র আকার ধারণ করায় সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লক্ষাধিক মানুষ চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে।

আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্থার করা না হলে জোয়ারের তীব্র স্রোত আশাশুনি, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার কপোতাক্ষ নদ, খোলপেটুয়া, ইছামতি ও বেতনা নদীর বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ ও ২ এর অধীনে ১১ টি পোল্ডার ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৭০ টি পয়েন্ট ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অধিক ঝুকিপূর্ণ। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় আতংকে দিন কাটাচ্ছে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ- ১ ও ২ এর আওতাধীন আশাশুনি উপজেলার জলখালী, দেয়ারঘাট, কেয়ারগাতি, চাকলা, বিছট, কাকবসিয়া, কোলা, হাজারাখালী, ঘোলা ত্রিমাহনী, হিজলিয়া, চন্ডিতলা ও বুধহাটার তেতুলতলা, দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতী, চরকামরপুর, খারাট, টাউন শ্রীপুর ও ভাতশালা এবং শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গাবুরা, কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ ও রমজাননগর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধ মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোন মূহুর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এই তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক লোক পানি বন্দী হয়ে পড়বে।

পানিতে তলিয়ে যাবে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের ও ফসলের ক্ষেত। উৎপাদন ব্যাহত হবে দেশের সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি।
একই ভাবে মারাত্মক ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত নদী ইছামতি।

সম্প্রতি উপজেলার সুশীলগাতী, চরকামরপুর, টাউনশী্রপুর ও ভাতশালা এলাকায় ইছামতি নদী‘র বেড়িবাঁধ ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষজন চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের বার্তা বাজারকে জানান, তার বিভাগের অধিনে ৩৮০ কিলোমিটর বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে অধিক ঝুপিপূর্ন বেড়িবাঁধের পরিমান প্রায় ৮ কিলোমিটার এবং ঝুকিপূর্ন বেড়িবাঁধ ৩০ কিলোমিটার মতো।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য সম্প্রতি ২কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ গুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ উজ্জামান খান বার্তা বাজারকে জানান, তার বিভাগের আওতাধীন ৪২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুকিপূর্ন এবং প্রায় ২০০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ন রয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না আসায় এসব বেড়িবাঁধ তেমনভাবে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছেনা। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবেলায় টেকসহি বাঁধ নিমার্ণের লক্ষ্যে পাউবো বিভাগ-২ এর অধিন ৭/১, ৭/২ ও ১৩-১৪/১ এবং ১৩-১৪/২ নং পোল্ডারের ভাঙ্গন কবলিত ৩৪টি পয়েন্ট বাঁধ সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ৪কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চাহিদার বিপরিতে বরাদ্দের পরিমান এতোই নগন্য যে তা দিয়ে যতসামান্য কিছু করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।

আরো প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধসমূহ মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর