বিক্ষুব্ধদের রোষানলে বিএনপির নেতারা, দৌড়ে পালালেন অনেকে

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতারা। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুসহ অনেককে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে দৌঁড়ে পালিয়ে যান অনেক নেতা।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে এ ঘটনা ঘটে।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বিগত দিনে থানা কমিটি গঠনে সেচ্ছাচারিতা, পকেট বাণিজ্য করে সংগঠনকে শেষ করে দিয়েছে। এখনও তারা সেই কাজটিই করছেন। এর সঙ্গে নতুন করে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচন করতেও বাণিজ্য শুরু করেছেন। তারা কাউন্সিলর নির্ধারণ করতে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

তারা জানান, এসব অভিযোগ বিএনপির হাইকমান্ডকে অবগত করলেও কোনো সমাধান হয়নি। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে বলে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।

নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ৩ জুন দলের গুরুত্বপূর্ণ এই সাংগঠনিক ইউনিটের ২৫টি থানা ও ৫৮টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগরের উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান। বিতর্কিত ও অখ্যাতদের দিয়ে পকেট কমিটির অভিযোগ তুলে মহানগর উত্তরের ৬৬ জন নেতার মধ্যে ৩২ জন ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ঘোষিত কমিটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ লিখিত আকারে তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছয় দফা বৈঠক ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সবকিছু অবহিত করেন তারা। তবে দলের হাইকমান্ড কোন্দল সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্রোহী নেতারা পৃথক ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

তারা জানান, এরই মধ্যে গত ১৭ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণী শাহজাহানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। শেরে বাংলা নগর এলাকার পাশে হওয়ার কারণে মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতির অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করতে পারেন বলে তারা মনে করছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধদের প্রধান টার্গেট ছিল মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক এবিএম রাজ্জাক। তবে তারা পালিয়ে যাওয়ায় মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুকে কিল, ঘুষি, লাথি মারা ছাড়াও তার পাঞ্জাবি ছিড়ে ফেলা হয়। পরে তিনিও দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে আঞ্জুর বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঢাকায় বিএনপিকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল মহানগরকে দুই ভাগ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৭০ সদস্যের এবং এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা উত্তরের ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব। এদের মধ্যে এমএ কাইয়ুম মামলা জটিলতার কারণে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর