রাত পোহালেই ধামরাইয়ে উপজেলা নির্বাচন

‘নৌকার বিরুদ্ধে গেলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন কঠোর হুঁশিয়ারীকে সামনে রেখেই রাত পোহালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ধামরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।

রবিবার (৩১ মার্চ) চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগেরই দুই প্রার্থীর (একজন স্বতন্ত্র) ভিতরেই মূলত নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মিজানুর রহমান মিজান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাদ্দেস হোসেন লড়ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে।

ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী থাকায় ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন এই দুই পদের প্রার্থীরা।

৩১ মার্চ ধামরাই উপজেলা পরিষদের অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৭ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রয়েছেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ করতে ঢাকা জেলা প্রশাসন ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মিলিয়ে মোট সতের জন ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছেন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ ) থেলে তারা কাজ শুরু করেছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম এর বরাত দিয়ে জানা গেছে।

এছাড়াও নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ করতে ধামরাই থানার অফিসার ইন-চার্জ দীপক চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। দুই প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব, গোয়েন্দা সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য সংস্থাও মাঠে তৎপর রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।

এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলতে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। ব্যক্তিস্বার্থে তারা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে পছন্দের লোকজনকে প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে নামিয়েছেন।

তাদের এমন কর্মকাণ্ডে চরম অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দিয়েছেন এমন স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির হাইকমান্ড।

গতকাল শুক্রবার (২৯ মার্চ) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে এক সূত্র মারফত জানা যায়, উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির নামও বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। নেতাদের আলোচনা শুনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে তারা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে যেসব মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতা দল মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন না তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিবেদন তৈরি ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সবকিছু মিলিয়ে ৩১ মার্চের নির্বাচনে ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন সাধারণ ভোটারদের ভিতরে এক উৎসবমুখর পরিবেশের আবহ তৈরী করেছে। যার যার পছন্দের প্রার্থীদের কে বিজয়ী করে আনতে তারা আগামীকাল নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর