মানুষের জন্যই জীবন উৎসর্গ করতে চাই

মানুষের পাশে থাকার আনন্দই আলাদা। বিশেষ করে অসহায় মানুষদের সামান্য সহায়তা করতে পারলেই প্রকৃত সুখ মেলে। এ সুখের অন্ত থাকে না। মানুষের জন্যই জীবন উৎসর্গ করতে চাই। তবে মনে-প্রাণে এ-ও চাই, মানুষ যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বিপদে না পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টারের স্বেচ্চাসেবক লিমা জীবন নিয়ে ঠিক এমনই অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন। গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন নেভাতে সকাল থেকে টানা কাজ করছিলেন লিমা। শীর্ণকায় শরীরে পাহাড়সম জোর নিয়ে অন্যাদের সঙ্গে সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন। রোভার স্কাউট আর ফায়ার সার্ভিসের অন্য কর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভাতে পানির পাইপ টানছিলেন দুপুর পর্যন্ত। নিজে কাজ করছেন, আবার অন্যদেরও কাজের ধরনও বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সকাল থেকে এক মুহূর্তও বিশ্রামের সময় পাননি এই তরুণী।

শনিবার জোহর নামাজের যখন আজান হচ্ছিল, ঠিক তখনও ডিএনসিসি মার্কেটের একটি দোকান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। সে ধোঁয়া নেভাতেই ব্যস্ত তখন দমকল বাহিনীর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ৩৫ জন স্বেচ্চাসেবী কর্মী। লিমা তাদেরই একজন।

ইডেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী লিমা। বাড়ি সিলেটে। তবে পরিবারের সঙ্গে এখন ঢাকাতেই থাকেন। বাবা পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত। টেলিভিশনে ডিএনসিসি মার্কেটের খবর দেখে সকালে লিমার বাবাই ঘুম ভাঙিয়েছেন। সকালের নাস্তা না সেরেই সোজা চলে এসেছেন ঘটনাস্থলে। সকাল থেকেই একটানা শ্রম দিয়ে আসছেন লিমা।

স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দক্ষকর্মীর মতো কাজ করার জন্য আনসার-ভিডিপির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন দুই বছর আগে। স্কুল-কলেজেও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে দল বেঁধে স্বেচ্চাসেবকের কাজ করেছেন এই শিক্ষার্থী।

কাজের ফাঁকে ফাঁকেই লিমা তার জীবনবোধ নিয়ে বলেন, যেকোনো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলেই ভালো লাগে। আর এই অভ্যাসটা ছোটবেলা থেকেই। বলতে পারেন পরিবার থেকেই এমন শিক্ষা। আজকেও তো বাবাই ঘুম থেকে জাগিয়ে খবরটি দিলেন। আগুন জ্বলছে দেখে সোজা চলে এসেছি। থাকতে চাই মানুষের কাছেই।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর