ব্যথায় চিৎকার করায় অপারেশন থিয়েটারেই প্রসূতিকে চড়-থাপ্পড়

ব্যথায় যখন ছটফট করছিলাম, তখন ওরা কেউ আমার কথা শোনেননি। ব্যথায় চিৎকার করায় অপারেশন থিয়েটারেই আমাকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়।’ কথাগুলো প্রসূতি আফরোজা বেগমের।

সন্তান প্রসবের পর আফরোজার গোপনাঙ্গে সুই রেখেই সেলাই করে দেন চিকিৎসকরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে গত দুই দিন থেকে দেহে সুই নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করেন তিনি।

খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে সাংবাদিকরা গেলে আফরোজা তার যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। হাসপাতাল থেকে সাংবাদিকরা চলে আসার পর বিকেলে পুনরায় অপারেশন করে গোপনাঙ্গ থেকে সুই বের করেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভুক্তভোগী আফরোজা বেগমের মামি শাশুড়ি রনজিনা আক্তার অভিযোগ করেন, আফরোজা রংপুর সদরের পাগলাপীর এলাকার অটোরিকশাচালক তানজিদের স্ত্রী। তার ভাগনে বউ আফরোজার গত মঙ্গলবার প্রসব ব্যথা উঠলে বিকেল ৩টার দিকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওইদিন রাত ৮টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সিজার না করে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য আফারোজার গোপনাঙ্গ কেটে মেয়ে সন্তান প্রসবের পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে গাইনি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

রনজিনা আক্তার আরও অভিযোগ করেন, অপারেশনের পর থেকেই অসহ্য ব্যথায় ছটফট করতে থাকেন আফরোজা। সেই সঙ্গে চলে রক্ত ক্ষরণ। একপর্যায়ে বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তারা বৃহস্পতিবার সকালে এক্সরে করার পরামর্শ দেন।

তাদের পরামর্শে মেডিকেলের বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করালে আফরোজার গোপনাঙ্গের ভেতর সুইয়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। বিয়য়টি জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলেই গোপনাঙ্গ থেকে সুইটি বের করা হয়।

রনজিনা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাগনে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। দুই দিনে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর পুরোটাই ধার করে নেওয়া। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরুণসহ দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন সুলতানা লাকী বলেন, ‘ভুলক্রমে এটা হয়েছে। রোগীর সুচিকিৎসায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘সম্ভবত এটি একটি মিসটেক হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর