মাফ করে দিও: স্ত্রীকে ফোনে টাঙ্গাইলের তুষার

আমাদের ভবনে আগুন লেগেছে। এ মুহূর্তে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এখান থেকে বের হতে পারবো কি না জানি না। আমার জন্য সবাই দোয়া করো এবং মাফ করে দিও।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনে আটকা পড়ার পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নাহিদুল ইসলাম তুষার তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার নদীকে ফোনে এসব কথা বলেন।

নাহিদুল ইসলাম তুষার মাস্টার্স পাস করার পর এফআর টাওয়ারের দশ তলায় হ্যারিটেজ ট্রাভেলস এজেন্সিতে চাকরি করতেন। গত চার বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি কাজ করছিলেন। সে ওই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কমর্রত ছিলেন। গত চার বছর আগে মাহমুদা আক্তার নদী ও নাহিদুল ইসলাম তুষারের দাম্পত্য জীবন শুরু হলেও তাদের কোনো সন্তান ছিল না। তুষার মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউপির ইছাক আলী মিয়ার ছেলে।

বনানীর এফআর টাওয়ারের ভবনে আটকা পড়ার পর মোবাইল ফোনে তার বাবা এছাক আলী, মা নুরুন্নাহার, বড় ভাই তুহিন, ছোট ভাই শিশিরের সঙ্গেও কথা বলেন। এ সময় সে তাকে বাঁচানোর জন্য তাদের সবার কাছে সাহায্য চান। ভাইয়ের মরদেহের সামনে নিয়ে ছোট ভাই তুহিন বিপদগ্রস্ত ভাইকে সাহায্য করতে না পারার জন্য বুক চাপড়ে বিলাপ করতে থাকেন। বেলা দুইটার দিকে স্ত্রী নদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় তার কাছে ক্ষমা চান। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার রাতে বনানী থেকে তুষারের মরদেহ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভানুয়াবহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শতশত মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকাল ১০টায় গ্রামের বাড়িতে তার জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় এলাকার শতশত মানুষ অংশ নেন।

এদিকে বনানীর এফআর টাওয়ারের আগুনে মির্জাপুরের ছেলে তুষার নিহত হওয়ার খবরে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন স্থানীয় এমপি, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর