অল্প লাভেই গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন বেপারিরা

আর মাত্র ১৬ ঘণ্টা পরেই ঈদুল আজহার নামাজ পড়বে দেশবাসী। শেষ মুহূর্তে রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে চলছে কেনা-বেচা। তবে গতকালের চেয়ে আজ ক্রেতাদের ভিড় তেমন দেখা যাচ্ছে না হাটগুলোতে। কিন্তু অসংখ্য গরু-ছাগল নিয় ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতারা।

ঈদের একদিন আগে রাজধানীর পশুর হাটগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেল। গত দুই দিনের তুলনায় আজ সকাল থেকে গরুর দাম কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।পশুর আধিক্য কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ (রোববার) দাম পড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

সাংবাদিকদের গরু বিক্রেতারা বলছেন, গতকালের তুলনায় এক একটি গরুতে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা কম দাম দিতে চাচ্ছেন ক্রেতারা। অনেকে সেই দামেই গরু বিক্রি করছেন।গতকাল (শনিবার) যে গরু এক লাখ ১০ হাজার টাকায়ও বিক্রি করিনি আজ সেই গরু ৯১ হাজারে ছেড়ে দিয়েছি। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এমনটাই জানালেন আফতাবনগর হাউজিং হাটের এক গরু ব্যবসায়ী।

আজ দুপুর থেকে যে কয়টি গরু বিক্রি করেছেন তার সবগুলোতেই লোকসান গুনতে হয়েছে বলে জানালেন পাবনার সাথিয়া থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার খান। তিনি বলেন, বয়োবৃদ্ধ গরুগুলো আর ফিরিয়ে নেব না, এতে আরো লস। ক্রেতারা কম দাম বলছে। যে গরু ৮০ হাজার টাকায় কিনে পাবনা থেকে এখানে আনতে আরো খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা, সে গরু ৭৫ হাজারের বেশি দাম উঠছে না।

প্রায় একইচিত্র গাবতলী ও শনিরআখড়া পশুরহাটের। গরু অনেক কিন্তু ক্রেতা কম। এক ক্রেতা জানান, গত দুই দিনই হাটে এসেছিলাম, দাম শুনে বিফল হয়ে বাসায় ফিরেছি। একটু আগে সফল হলাম। যে আকারের গরু গত দুদিন ধরে ১ লাখের নিচে দিচ্ছিল না আজ ৯২ হাজারে পেয়ে গেলাম।

কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাচ্ছেন না, বিক্রেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে গাবতলী হাটে গরু কিনতে আসা আরাফাত হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, হাটে গরুর অভাব নেই। তারপরও বেশি লাভের আশায় বেপারিরা গরু বিক্রি করেননি গত দুই দিন।

তিনি বলেন, যে গরুর সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন মণ মাংস হবে তার দাম ১ লাখ টাকা কী করে চান বিক্রেতা! আমরা ক্রেতারা তার দাম সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার ওপর বলছি না । ওই দামে গরু না ছাড়ায় হাটে অনেক গরু এখনো রয়ে গেছে।

তবে এই ক্রেতার মন্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলেন সিরাজগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী হাসেম বেপারি। তিনি বলেন, গরু গ্রামে কেনা পড়েছে ৮০ হাজার টাকা। এরপর সপ্তাহ ধরে এদের খাওয়ানো ও ঢাকায় আনার পরিবহন ভাড়াসহ প্রতিটা গরুর পেছনে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে।

কষ্ট আর সময় বাদ দিলে প্রতিটি গরু ৯০ হাজারে না বেচতে পারলে লোকসানে পড়ব। অথচ আজ এই গরুর দাম বলছে ৭০/৭৫ হাজার টাকা। মানে প্রতিটি গরুতেই ১০/১২ হাজার টাকা লোকসান।

এদিকে রাজধানীর শনিরাখড়া পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই দিনের তুলনায় সকাল থেকে ক্রেতা কম। হাটে গরুর সংখ্যা অনেক। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। তবে শেষ মুহূর্তের ঝুঁকি না নিয়ে অল্প লাভেই গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন বেপারিরা।

বার্তা বাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর