কাশ্মীর ইস্যুতে মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও অনেকটা স্বশাসিত অঞ্চলটিকে দুইভাগ করে দেশটির সরকার সংসদে যে বিল পাস করেছে তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল হয়েছে। কাশ্মীরের আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স পিটিশনটি করেছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, শুক্রবার নাশনাল কনফারেন্সের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশনটি দাখিল করেন দলটির নেতা মোহাম্মদ আকবর লোন এবং হাসনাইন মাহসুদ। পিটিশনে বলা হচ্ছে, ‘জম্মু এবং কাশ্মীর আইন (পুনর্গঠন), ২০১৯ সাংবিধানিকভাবে অকার্যকর।’

পিটিশনটি দাখিলের মাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আইনগত কিছু প্রশ্ন তৈরি হবে। পিটিশনতে বলা হচ্ছে, ‘সংবিধানের ৩৭০ (১) (ঘ) অনুচ্ছেদে জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধানকে পাইকারিভাবে পুনস্থাপিত করার কোনো ক্ষমতা দেয়া হয়নি।’ সুপ্রিম কোর্টকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

পিটিশন অনুযায়ী, রাজ্যের মানুষ এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের (কাশ্মীরের বিধানসভা) সঙ্গে আলোচনা ও কোনো ধরনের সম্মতি না নিয়েই জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা একতরফাভাবে রদ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং স্বাধীনতাকে সামান্যতম মূল্যায়ন করা হয়নি।

গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। শুধু বিশেষ মর্যাদা বাতিল নয় কাশ্মীরকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।

গোটা ভারতের রাজনীতি এখন কাশ্মীর নিয়ে উত্তাল। বিজেপিসহ ভারতীয়রা কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত উদযাপন করছেন। কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো কিছুটা প্রতিবাদ জানালেও তা বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় খুবই নগণ্য।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কাশ্মীরের আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই আদালতে পিটিশনটি দাখিল করেছেন। প্রসঙ্গত, দলটির নেতা এবং কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এখন গ্রেফতার হয়ে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

গত ৫ আগস্ট সংবিধানে পাওয়া কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে মোদি সরকার। আর কাশ্মীরিরা যাতে এর কোনো প্রতিবাদ করতে না পারে তাই সেখানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানকার মানুষ এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ।

মোদি সরকারের মাস্টারে প্ল্যানের কাছে হেরে বিক্ষোভে ফুঁষে উঠেছে কাশ্মীর মানুষ। কারফিউ জারি থাকার কারণে সেখানে মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না। এ ছাড়া সেখানকার সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী এবং পাঁচ শতাধিক প্রভাবশালী স্থানীয় নেতাসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম সামরিকায়িত এলাকাগুলোর একটি কাশ্মীর। ভারতীয় সংবিধোনের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এতদিন কাশ্মীর প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া কোনো কিছুতেই ভারতীয় আইন মানতে বাধ্য ছিল না। কিন্তু মোদি তা বাতিল করেছে। এ ছাড়া রাজ্যের মর্যাদাও হারিয়েছে কাশ্মীর।

বার্তা বাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর