এবারের ঈদে দর্শনার্থীদের অন্যতম আকর্ষন রূপগঞ্জের বাঙ্গালবাড়ি

আর মাত্র কয়েকদিন পর ঈদ। ঈদে ভ্রমন পিপাসুরা ঘুরার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ভীড় জমায়। শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে একটুখানি প্রশান্তি কে না চায়। এবারের ভ্রমন পিপাসুদের জন্য অন্যতম আকর্ষন হতে পারে বাঙ্গালবাড়ি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রাজউকের পূর্বাচল উপ-শহরের ৯নং সেক্টরে বাঙ্গালবাড়ির অবস্থান। গ্রাম বাংলার ঐতিয্যবাহী তৈজসপত্র ও পুরানো সংস্কৃতি প্রায় হারানোর পথে। হারানো ঐতিয্য ও সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে পুরানোদিনের তৈজসপত্র বাঙ্গালবাড়িতে সংরক্ষন করা হয়েছে। যেখানে ভ্রমন পিপাসু ও দর্শনার্থীরা তাদের পরিবার ও সন্তানদের নিয়ে এসে গ্রাম বাংলার ঐতিয্য সম্পর্কে ধারনা দিতে পারবে।

জানা যায়, ৫ বছর আগে গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিয্যকে বাচিঁয়ে রাখতে বাঙ্গাল বাড়িটি গড়ে তোলেন গবেষক, কলামিষ্ট ও রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন মীর আলীম। পরে যেখানে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুরানো দিনের তৈজসপত্র এনে সংরক্ষন করতে শুরু করেন। বর্তমানে বাঙ্গাল বাড়িটি ভ্রমন পিপাসুদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থানে পরিনত হয়েছে। ঈদ ও বিভিন্ন সরকারি ছুটিরদিন গুলোতে এখানে দর্শনার্থীদের পদচারনায় মূখরিত থাকে বাড়িটি। বাঙ্গালবাড়িতে রয়েছে নাগরদোলা, নৌকা, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রেডিও, পালকি, গরুর গাড়ী, বাশি, তবলা, চাই, বেহালা, খরমসহ অসংখ্য পুরানো দিনের তৈজসপত্র। এছাড়া দর্শনার্থীরা ছন ও বাঁশ দিয়ে তৈরী ছাউনীতে বসে মাটির চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে তাদের মনের প্রশান্তি বাড়াতে পারবেন। আবার কেউ চাইলে মাটি বাসনে করে দুপুরের খাবারটাও সেরে নিতে পারবেন। এ যেন এক অন্যন্য অনুভুতি। বাড়িটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা আছে। যেখানে যে কেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারবেন।

ভুলতা এলাকা থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিয্য আজ হারানোর পথে। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের পুরানো দিনের সংস্কৃতি সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা নেই। এখানে এসে ছেলেমেয়েরা পুরানো দিনের ঐতিয্য ও সংস্কৃতি সস্পর্কে ধারনা পাচ্ছে।

সাইদুর নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ছেলেকে নিয়ে ঢাকা থেকে এখানে ঘুরতে এসেছি। ঢাকার ব্যস্ত জীবন থেকে একটুখানি অবসর পেতে বাঙ্গাল বাড়ির প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরতে এসেছি। এখানে পুরানো দিনের তৈজসপত্রের একটি জাদুঘর রয়েছে। এ জাদুঘরে অনেক ধরনের ঐতিয্যবাহী তৈজসপত্র দেখেছি। ঢাকার এতো কাছে এতো সুন্দর মনোরম জায়গা আছে ভাবা যায় না।

আরেক দর্শনার্থী সূজন মিয়া বলেন, বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে মানুষ যেন নিশ^াস ফেলার সময়টুকু পাননা। যদি ক্ষনিকের জন্য শহুরে জীবন থেকে মুক্ত হয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে এসে থাকা যায় তাহলে মন্দ হয় না। তাই তিনি মাঝে মাঝেই বাঙ্গাল বাড়ির মুক্ত পরিবেশে ঘুরতে চলে আসেন।

বাঙ্গাল বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা গবেষক, কলামিষ্ট, লেখক ও রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, নতুন প্রজন্মকে পুরানো দিনের তৈজসপত্র ও আসবাবপত্র সম্পর্কে ধারনা দিতেই বাঙ্গাল বাড়িটি নির্মাণ করার চিন্তা করি। দিনদিন বাঙ্গালবাড়ি দর্শনার্থীদের কাছ জনপ্রিয় উঠছে। বাঙ্গালবাড়িতে রয়েছে, গরুর গাড়ী, নাগরদোলাসহ বিনোদনের জন্য বিভিন্ন জিনিস। এছাড়াও আছে বাঙ্গালী সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন তৈজসপত্র।

বার্তাবাজার/এসআর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর