হঠাৎ কোন ধরনের যোগাযোগ ছাড়াগত সোমবার সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে মোদি সরকার।এর আগের দিন থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ভারত।এতে কাশ্মীরের জনগণ কার্যত গোটা বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে পড়ে।এরপর প্রায় চার দিন এ নিয়ে কোন কথা বলেননি মোদি সরকার। অবশেষে তিনি মুখ খুললেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতো হবে না। এখানে বিধানসভা থাকবে, নির্বাচন হবে, মুখ্যমন্ত্রী থাকবে, থাকবে মন্ত্রিসভাও। তিনি বলেছেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি।
জাতির উদ্দেশে বৃহস্পতিবার (-০৮ আগস্ট) রাতে দেওয়া ভাষণে মোদি এসব কথা বলেন। গত সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা হয়। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর বিশেষ মর্যাদা হারায়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদি তার ভাষণে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিলের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে কাশ্মীরে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। সেখানে শিল্পায়ন, পর্যটন ও সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
মোদি দাবি করেন, তার সরকার কাশ্মীরের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, বি আর আম্বেদকর, শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি, অটল বিহারি বাজপেয়ির মতো নেতাদের সঙ্গে কোটি কোটি ভারতীয়র স্বপ্ন পূরণ করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। এই বিচ্ছিন্নতা ও সন্ত্রাসবাদের কারণে গত তিন দশকে কাশ্মীর অঞ্চলে ৪২ হাজার নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
মোদি বলেন, তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ ভারতের অন্যান্য নাগরিকের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। তাদের সন্তানেরা শিক্ষায় এগিয়ে যাবে, নারী অধিকার সংরক্ষণ হবে। আগে জম্মু-কাশ্মীরের দেড় কোটি জনগণ ভারতীয় আইন থেকে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতে পারেনি।
লাদাখকে আলাদা অঞ্চল করার প্রসঙ্গে মোদি বলেন, পর্বত উচ্চতায় বসবাসরত ওই অঞ্চলের মানুষদের আলাদা সংস্কৃতি রয়েছে। সেখানে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। সেখানে প্রচুর ওষধি গাছ-গাছরা জন্মায়, চাষ হয়। সেগুলো থেকে লাদাখের জনগণ প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবে। হারবাল চিকিৎসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
মোদি তার ভাষণে কাশ্মীর নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ভাবতে বলেন। তার ভাষ্য, নৈসর্গিক এই অঞ্চল পর্যটন ও চলচ্চিত্রের জন্য বিশেষ আকর্ষণের স্থান হতে পারে। তিনি বলেন, আগে যখন কাশ্মীরের অবস্থা স্বাভাবিক ছিল তখন বলিউড মুভির জন্য পছন্দের জায়গা ছিল এটি।
আগামী সোমবার পবিত্র ঈদুল আযহা।তাই ধারণা করা হচ্ছে ক্ষোভের আগুনে পুড়তে থাকা বন্ধী মুসলমানরা সে দিন একত্রিত হয়ে মোদির বেআইনি নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারে।সে বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে মোদি সরকার।
মোদি বলেন, সরকার কাশ্মীরে ঈদ উদ্যাপনের প্রয়োজনীয় অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি যারা আসন্ন ঈদ পালনে জম্মু-কাশ্মীরে যেতে ইচ্ছুক, সরকার তাদেরও সহযোগিতা করছে।
বার্তাবাজার/এএস