পাবনা ঢাকা মহাসড়কে যানজটে সপ্তাহজুড়ে জনদুর্ভোগ

পাবনার ঢাকা মহাসড়কে শৃংখলা না থাকায় ও সড়কের পাশে হাট হওয়ায় এবং মহাসড়কে নসিমন,করিমন অটোবাইকের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় প্রতিনিয়তই যানজট লেগে থাকে এ সড়কটিতে। এ যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। যানজট নিরসনে কেউ এগিয়ে না আসায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। শৃংখলার যেন বালাই নেই। যে যার মত গাড়ী ঢুকিয়ে দিয়ে আরও বেশী যানজট করে তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পাবনা সওজের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান হওয়ায় কাশিনাথপুর বেড়া সিএন্ডবি চতুর হাট এলাকায় যানজট অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে মনে করেন অনেকে। অবৈধ দখলদারদের নিকট থেকে উদ্ধারকৃত জায়গাগুলোকে এভাবে ফেলে না রেখে যদি তা সংস্কার করেন পাবনা সওজ বিভাগ তাহলে ওই এলাকার যানজট নিরসন আরও গতি বাড়বে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,পাবনা থেকে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গে যেতে মহাসড়কের পাশে হাট হওয়াতে ও সড়কের শৃংখলা না থাকায় প্রতিনিয়তই যানজটে পড়ে সড়কে চলাচলকারী যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েন ঢাকা গামী পরিবহনের যাত্রীসহ আন্ত জেলা যাতায়াতকারী জনসাধারণ। পাবনা থেকে ঢাকা বা উত্তরা লে যেতে প্রায় ৭০ কিঃমিঃ সড়ক পাবনা জেলার মধ্যে পাড়ি দিতে হয়। আর এ সড়কেই পুস্পপাড়া, আতাইকুলা, বনগ্রাম, চিনাখড়া, বিরাহিমপুর, কাশিনাথপুর,সিএনডবি চতুরহাট নামক স্থানে ছোটবড় ৭/৮টি হাট লাগে। সপ্তাহের শুরুতেই শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিনই কোন কোন জায়গায় হাট বসছে।

জানা যায়,মহাসড়কের পাশে হাট হওয়ায় আর ঈদের বাজার গরুর হাট ও বিশৃংখলাভাবে যানবাহন চলাচলের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হচ্ছে তাদের। তবে প্রশাসন সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনলে যানজট অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।

অপরদিকে এ সব হাটে আসা যানবাহনগুলো সড়কের পাশেই পার্কিং করায় আরও যানজটের সৃষ্টি করে। এসব জায়গায় ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকলেও দেখার কেউ নেই। কোন জায়গাতেই দেখা মেলে না কোন ট্রাফিক পুলিশের বা হাইওয়ে পুলিশের। এদিকে হাটে নতুন উঠতে শুরু করেছে সোনালী আঁশ পাট। অনেক হাটে সড়কের জায়গায় রাস্তার পাশেই পাট কেনা বেচা হয়। এতেও অনেকটা যানজট লেগে যায়। ফলে ওই মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন বিশেষ করে এম্বুলেন্স গুলো ইমারজেন্সি রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েন। তবে আতাইকুলা নামকস্থানে ২/১জন সাধারণ জনগণ যানজট নিরসনে কাজ করলেও হিমশিম খেয়ে যায়।

সরজমিন পাবনা ঢাকা মহাসড়কের পাশে থাকা হাটগুলো ঘুরে ও পরিবহন চালক এবং যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহাসড়কের পাশে হাট বসায় ও সড়কে কোন শৃংখলা না থাকায় যানজটে এই গরমে নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে তাদের। আবার হাটে আসা বিভিন্ন পণ্য ও গরু বহনকারী যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখায় আরও যানজটের সৃষ্টি করে। ফলে এ সময় মহাসড়কে শত শত গাড়ী আটকে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুস্পপাড়া গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দেড় কিলোমিটার ধরে জ্যাম লেগে আছে প্রায় এক ঘন্টা ধরে। যানজট নিরসনে কেউ এগিয়েও আসছে না। যানবাহন চালকেরা নিজেদের চেষ্টায় ধীর গতিতে হলেও গাড়ী চলছে। এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্যকেও চোখে পড়েনি। এমনকি ইজাদারদেরও কারও দেখা পাওয়া যায়নী যানজট নিরসনে।

ঢাকা থেকে পাবনা গামী কোচের যাত্রী আবদুর রাজ্জাক জানান, ঢাকার জ্যাম কাটিয়ে এমনিতেই হাঁপিয়ে উঠেছি। তারপর বাড়ির নিকট এসে যদি জ্যামে পড়ি তাহলে আর বলার কিছু নেই। সিরাজগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাবনাগামী হাসিব পরিবহনে যাত্রী এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষার্থী নুসরাত জানান, দুপুর ১টায় তার পরীক্ষা। এ জন্য আমার দুলাই বাসা থেকে বেড় হয়ে সকাল ১১টায় গাড়ীতে ওঠেছিলাম। যানজট না থাকলে ৩০/৩৫ লাগার কথা। সেখানে বেলা পৌনে একটা বাজে এখনও পুস্পপাড়া জ্যামে পড়ে আছি। কি যে করি ভেবে পাচ্ছি না।

জ্যামে পড়ে থাকা ঢাকা গামী এম্বুলেন্স এর চালক মোমিন বলেন, আমরা পাবনা শহর থেকে শাহজাদপুর যেতেই এক ঘন্টার রাস্তায় ২ ঘন্টা লেগে যায়। মাঝে মাঝে ভয় হয় কাঠালবাড়িয়ার ঘাটে তিতাসের মত যদি জ্যামে পড়ে আমার রোগীর কিছু হয়ে যায়।

পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের সদস্য ও সরকার ট্রাভেলস এর মালিক কাফি সরকার বলেন, সড়কের পাশে হাট হওয়াতে এরকম জ্যাম হয় সড়কে তারপর আবার সামনে ঈদ। এতে আমাদের অনেক সমস্য হয়। যানজট নিরসনে ও সড়কে নিয়মশৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন সবচেয়ে বেশী জ্যাম ঢাকা চান্দুরা থেকে কড্ডার হাটিকুমরুল সড়ক। তিনি এ মহাসড়কের যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে মাধপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সাব-ইনসপেক্টর আব্দুল খালেক প্রতিদিনের সংবাদকে জানান গত দু’দিন ধরে আমরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে ব্যস্ত ছিলাম হয়তো দেখেন নাই। তিনি বলেন,ঈদের বাজার একটু তো যানজট হবেই এটুকু মেনে নিতেই হবে। আর আমাদের যানজট নিরসনে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর