কুষ্টিয়ায় শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নবজাতকসহ দেড়’শ শিশু হাসপাতালে

দিনে প্রখর রোদের সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে ঘাম ঝরছে খেটে খাওয়া মানুষের। তবে দিনে তীব্র রোদ্র আর গরমের রেশ থাকলেও রাতে আকস্মিকভাবে ঠান্ডার আগমনে আবহাওয়া জনিত কারনে নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এ সময়ে বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সর্দি, কাশি, ডায়েরিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত নানা রোগ। বাড়তি সতর্কতা নিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সর্দি, কাশি লেগে থাকছে শিশুদের। গত কয়েক দিনে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডসহ বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে কয়েকশ রোগী।

বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৮ বেডের স্থলে ১শ ৪৮ জন শিশু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় আড়াই রোগী। এ ছাড়া ডাইরিয়া ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন ৬৬ জন রোগী। এদের মধ্যে ৫৫ জনই শিশু রোগী।

গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে মনে হয়েছে এ যেন লোকাল বাস ! ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা গেল রোগী ও স্বজনের ভীড়। সেখানে দুইজন নার্স সেবা দিচ্ছেন। সামনে শিশু রোগীদের নিয়ে ভীড় করে আছে রোগীর স্বজনরা। ওয়ার্ডের মধ্যে রোগীর জায়গা না হওয়ায় বাহিরে রোগীরা যত্রতত্র বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরই মধ্যে রোগী ও রোগীর সাথে থাকা স্বজনদের চলছে খাওয়া দাওয়া। সব মিলিয়ে ওয়ার্ডটি যেন মেছোবাজারে পরিণত হয়েছে।

শিশু ওয়ার্ড সূত্রে জানাগেল, সেখানে মাত্র ২৮ টি বেডে রয়েছে। অথচ ওই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে ১শ৪৮ জন। এই রোগীদের মধ্যে ১ দিনের শিশু থেকে ৫ বছর বয়সী রোগীই বেশী। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে রীতিমত হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানান কর্তব্যরত নার্স।

তবে ওয়ার্ডে কয়েকজন রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তার প্রতিদিন সময়মতো ওয়ার্ডে রাউন্ডে আসে না। সেবিকাদের ঢাকলে সঙ্গে সঙ্গে আসে না।

এদিকে হাসপাতালের দায়িত্বরত এক সেবিকার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ১৪৮ জন রোগীর ভর্তি রয়েছে শিশু ওয়ার্ডে যেখানে বেড ২৮ টি। এতগুলা রোগীর দেখাশোনা জন্য চারজন সেবিকার। আমরা একটি সেকেন্ডের জন্যও সময় অপচয় করি না। রোগীদের সেবা দেয়াই আমাদের কাজ। এতগুলা রোগী দেখাশোনা করতে গেলে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ আসতেই পারে।

হাসপাতালের শিশু কর্তব্যরত ডাঃ আয়ুব আলী জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এমনিতেই নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা। এতে আবহাওয়া জনিত কারনে রোগের হার বেড়ছে। বর্তমানে দিনে বেশ গরম এবং রাতে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। এ জন্য শিশুরা সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে।

এ সময় শিশু এবং বয়স্কদের ঠাণ্ডা লাগানো এবং ধুলাবালু থেকে বিরত রাখতে হবে। শিশুদের বেশি করে তরল খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন । এছাড়া ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে বলে জানান তিনি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর