লঙ্কাওয়াস হলো বাংলাদেশ

সিরিজ জয়ের তাড়া নেই। শ্রীলঙ্কাও তাই এই ম্যাচটাকে নিয়েছে নিয়মরক্ষার ম্যাচ হিসেবে। বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে টস হারলেন তামিম ইকবাল।

ফলে প্রথমে ফিল্ডিং। টস জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে শুরুতেই একটা ধাক্কা দিতে পেরেছিলেন পেসার শফিউল ইসলাম। দলীয় ১৩ রানের মাথায় আভিসকা ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ একটা ব্রেক থ্রু এনে দিতে সক্ষম হন শফিউল।

কিন্তু ১৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর সতর্ক শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ায় ধীরে ধীরে। অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে এবং নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরার ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশের সামনে ইনিংসটাকে বড় করতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা।

এক এক করে ৮৩ রানের জুটি গড়ে ফেলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। রুবেল, তাইজুল, মিরাজ, সৌম্য কিংবা মাহমুদউল্লাহ- কেউই পারছিলেন না এই জুটি ভাঙতে।অবশেষে সফল হলেন তাইজুল ইসলাম।

তার করা ২১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের হাতে ক্যাচ দেন দিমুথ করুনারত্নে। ৬০ বলে ৪৬ রান করে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান করুনারত্নে। ৬টি বাউন্ডারির মার মারেন তিনি।

দলীয় ৯৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর কেন যেন নিঃসঙ্গ হয়ে যান কুশল পেরেরা। হয়তো বা এ কারণেই পরের ওভারে রুবেলের বলেই একইভাবে উইকেট দেন কুশল পেরেরা। ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন পেরেরা।

৫১ বলে এ সময় ৪২ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন তিনি। দলীয় রান ৯৮। অর্থ্যাৎ ১ উইকেটে ৯৬ থেকে শ্রীলঙ্কা ৯৮ পরিণত হয় ৩ উইকেটে।
৩ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা যখন চাপে ঠিক তখনই দলের হাল ধরেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ এবং কুশল মেন্ডিস। রীতিমতো বাংলাদেশী বোলারদের শাষন করে যাচ্ছেন এই ব্যাটসম্যান ।

ঠিক তখনি লংকান শিবিরে আঘাত হানেন সৌম্য। দলীয় ১৯৯ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৫৪ রান নিয়ে সৌম্যের বলে বিদায় নেন কুশল মেন্ডিস। আউট হওয়ার আগে মেন্ডিস করেন ৫৮ বলে ৫৪ রান। মেন্ডিসের আউটের পর মাঠে আসেন সানাকা ।

রীতিমতো বিদ্ধ্বংসী ব্যাটিং করেন সানাকা। কিন্তু শফিউলের কারণে বেশিক্ষন মাঠে থাকতে পারেন নাই এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। দলীয় ২৫১ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ১৪ বলে ৩০ রান করে শফিউলের বলে বিদায় নেন সানাকা।

তারপর একে একে বিদায় নেন জয়সুরিয়া(১৩), ম্যাথিউস(৮৭),আকিলা(০)। শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকা সংগ্রহ করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৪ রান। যার ফলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৯৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষ্যে শফিউল এবং সৌম্য নেন ৩ উইকেট করে, রুবেল এবং তাইজুল নেন ১ টি উইকেট করে।

২৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে দলীয় মাত্র ৪ রানে আউট হন তামিম ইকবাল । দুর্ভাগ্য এনামুল হক বিজয়ের। ১২ মাস দু’দিন পর খেলায় ফিরেও সুবিধা করতে পারেননি জাতীয় দলের তারকা এ ব্যাটসম্যান। এক বছরের লম্বা সময় পর দলে ফিরে মাত্র ১৪ রানে আউট হন এ ওপেনার। তারপর একে একে বিদায় নেন মুশফিক(১০),মিঠুন(৪) রান করে। মিঠুনের বিদায়ের পর মাঠে আসেন মাহমুদুল্লাহ ।

কিছুটা সাবধানী শুরু করলেও বেশিক্ষন মাঠে থাকতে পারেন নাই মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ৮৩ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৯ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তারপর মাঠে আসেন সাব্বির।

সৌম্যেকে ভালোই সঙ্গে দিচ্ছিলেন সাব্বির। কিন্তু তা ক্ষনিকের জন্যে। দলীয় ১০৫ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৭ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। সাব্বিরের বিদায়ের পর একই পথে হাঁটেন মিরাজ।দলীয় ১১৭ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৮ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মিরাজ ।

সৌম্য একা লড়াই করে গেলেও শেষ পর্যন্ত বিদায় নেন সৌম্য । দলীয় ১৪৩ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৬৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান এই বামহাতি ব্যাটসম্যান। তারপর একে একে বিদায় নেন শফিউল(১), রুবেল(২)। ২৮ বলে ৩৯ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৩৬ ওভারে ১০ উইকেটে ১৭২ রান। যার ফলে শ্রীলংকা জয়লাভ করে ১২২ রানে। এবং লঙ্কাওয়াস হয় বাংলাদেশ ।

বার্তা বাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর