কুতিনহোর বিদায়ের পথ খুলে দিয়েছে বার্সা!

হায়রে নিয়তি! হায়রে পেশাদারিত্ব! ফিলিপে কুতিনহোকে শেষ পর্যন্ত বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনাই হাতে নিয়েছে বার্সেলোনা। স্পেনের জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক মার্কার খবর অন্তত সে রকমই।

পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুতিনহোর বিদায়ের পথ খুলে দিয়েছে বার্সা। আসন্ন গ্রীষ্মকালীন দলবদল মৌসুমেই নাকি ব্রাজিলিয়ান তারকাকে বিক্রি করে দেবে কাতালন জায়ান্টরা।

নেইমারের বিকল্প হিসেবে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে কত কাঠখড় পুড়িয়েই না ফিলিপে কুতিনহোকে কিনে এনেছে বার্সেলোনা। ব্রাজিলিয়ান তারকাকে কিছুতেই বিক্রি করতে রাজি ছিল না লিভারপুল। সরল পথে কাজ না হওয়ায় বার্সেলোনা হাঁটে কালো পথে।

তলে তলে নানা টোপ-লালসা দেখিয়ে, ফুঁসলিয়ে-ফাঁসলিয়ে কুতিনহোকে ক্লাব লিভারপুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে তোলে। ফলে বাধ্য হয়েই বার্সার কাছে কুতিনহোকে চড়া দামে বিক্রি করে দেয় লিভারপুল।

ক্লাব রেকর্ড ১৬০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিতে কুতিনহোকে কেনার লালসা পূর্ণ করে বার্সেলোনা। হ্যাঁ, চুক্তিটা ১৬০ মিলিয়ন ইউরোর। এর মধ্যে ১২০ মিলিয়ন ইউরো লিভারপুলকে নগদই দিয়েছে বার্সেলোনা। কিন্তু এত শখ করে যাকে কিনে আনা, বছর যেতই সেই কুতিনহোর ওপর থেকে বার্সেলোনার মোহ কেটে গেছে! ন্যু-ক্যাম্পে ব্রাজিলিয়ান তারকার আর প্রয়োজনই দেখছে না বার্সা।

ন্যু-ক্যাম্পে ২৬ বছর বয়সী কুতিনহোর শুরুটা হয়েছিল দারুণ। বার্সেলোনার খেলায় কুতিনহো যোগ করেন ব্রাজিলিয়ান ‘সাম্বার’ ছন্দ। সমর্থক থেকে শুরু করে কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে-সবাই কুতিনহোয় মুগ্ধ ছিলেন। এমনকি কুনিনহো ন্যু-ক্যাম্পে বর্ষিয়ান মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার যোগ্য উত্তরসূরি হবেন—এমন সার্টিফিকেটও দিয়ে দেন অনেকে।

কিন্তু সেই মুগদ্ধতা ফুরিয়ে গেছে। এ জন্য অবশ্য কুতিনহো নিজেই দায়ী। শুরুটা আশাজাগানিয়া হলেও এ মৌসুমে ব্রাজিলিয়ান তারকা নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না। যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে চড় দামে কিনে আনা, কুতিনহো সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। ফল কোচ ভালভার্দের আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এখন এমনটাও বলা হচ্ছে, কুতিনহো ঠিক কোচ ভালভার্দের কোচিং দর্শনের সঙ্গে যায় না!

যে খেলোয়াড় কোচের দর্শন, স্টাইলের সঙ্গে যায় না, তাকে দলে বসিয়ে রাখা মানে হাতি পোষা! বার্সেলোনা হাতি পুষতে রাজি নয়। তা ছাড়া মাঝমাঠে কুতিনহোর পজিশনে ডাচ তরুণ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়াংকে কিনেছে বার্সেলোনা। প্রতিভাবান এই ডাচ তরুণ আগামী জুলাইয়ে যোগ দেবেন ন্যু-ক্যাম্পে। সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ান মডিফিল্ডার ইভান রাকিতিচ তো আছেনেই।

দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে কুতিনহোর জন্য বিদায়ের দরজাই উন্মুক্ত করেছে বার্সেলোনা। কিন্তু বিক্রির পরিকল্পনা নিলেও বার্সেলোনা সত্যি সত্যিই তাকে বিক্রি করতে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে!

কারণটা দাম। বার্সেলোনা যে দামে তাকে কিনে এনেছে, কোনো ক্লাবই যে সেই দামে কুতিনহোকে কিনবে না, এটা শতভাগ নিশ্চিত। এদিকে বার্সেলোনার টার্গেট, অন্তত ১০০ মিলিয়ন ইউরোয় বিক্রি করা। প্রশ্ন হলো, এতো দাম দিয়ে অফফর্মের কুতিনহোকে এখন কিনবে কে?

দুই ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনালের আগ্রহ আছে এই ব্রাজিলিয়ানের প্রতি। ধারণা করা হচ্ছে, এই দুই ক্লাবের একটিই হতে পারে কুতিনহোর সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ঠিকানা। এ ছাড়া ফরাসি ক্লাব পিএসজিও নাকি কুতিনহোকে দলে টানার বিষয়ে আগ্রহী। বন্ধু নেইমারের সঙ্গে সমর্কটাই নাকি কুতিনহোকে নিয়ে যেতে পারে পিএসজিতে। আনুষ্ঠানিকভাবে নিলামে তুললে হয়তো আরও অনেক ক্রেতার সন্ধ্যান মিলবে। কিন্তু এই মুহূর্তে কুতিনহোকে বিক্রি করতে বার্সেলোনার আগ্রহ যত প্রবল, সম্ভাব্য ক্রেতাদের ততটা নয়।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর